পিতার উপার্জিত বিপুল সম্পদ নিয়ে নানা প্রশ্ন

কাস্টমস কর্মকর্তার ছেলের অর্ধ কোটি টাকার কোরবানি নিয়ে তোলপাড়

Any Akter
বাংলাবাজার ডেস্ক
প্রকাশিত: ৩:৪৮ অপরাহ্ন, ১৯ জুন ২০২৪ | আপডেট: ৯:৫৩ পূর্বাহ্ন, ১৯ জুন ২০২৪
কাস্টমস বিভাগের কর্মকর্তা মতিউর রহমান ও তার পুত্র মুশফিকুর রহমান ইফাত। ছবিঃ সংগৃহীত
কাস্টমস বিভাগের কর্মকর্তা মতিউর রহমান ও তার পুত্র মুশফিকুর রহমান ইফাত। ছবিঃ সংগৃহীত

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের  ঊর্ধ্বতন কাস্টমস বিভাগের কর্মকর্তা মতিউর রহমানের পুত্রের অর্ধ কোটি টাকার গরু ছাগল কুরবানী নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। মতিউর রহমানের পুত্র মুশফিকুর রহমান ইফাতের ফেসবুকে সাদেকের আলোচিত 15 লাখ টাকার খাসি কেনা নিয়ে ভাইরাল হয়। সর্বত্রই আলোচনা হয় ইফাতের পিতার অবৈধ উপার্জন। এরপরই বিভিন্ন অনলাইনে আসতে থাকে খবর। 

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) এই কর্মকর্তার ছেলের এবার ঈদের কোরবানির জন্য ৫২ লাখ টাকার পশু কেনার ঘটনায় বিতর্কের ঝড় উঠেছে। এনবিআর কর্মকর্তা মতিউর রহমানের ছেলে মুশফিকুর রহমান ইফাত ঈদের জন্য এক ছাগল কিনেছেন ১৫ লাখ টাকায়। তার ছাগল কেনার ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। ছাগল কিনে আলোচনায় আসা ইফাত ছাগলের পাশাপাশি আরও চারটি গরু কিনেছেন ৩৭ লাখ টাকায়। সব মিলিয়ে ৫২ লাখ টাকায় কোরবানি দিচ্ছেন তিনি। তবে এই কর্মকর্তার ছেলে কেবল এবারই নয়, গেল বছরও কোরবানিতে ক্রয় করেছিলেন ৬০ লাখ টাকার পশু। যা নিশ্চিত করেছেন তাদের কাছে বিক্রি করা এক বিক্রেতা।

আরও পড়ুন: ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে না: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ইফাত রাজধানীর মোহাম্মদপুরের আলোচিত সাদেক এগ্রো থেকে ২৩ লাখ টাকায় ছাগল ও একটি গরু ক্রয় করেছেন। বাকি ৩ গরুর বাজার মূল্য ২৬ লাখ টাকা।

এতো টাকায় কোরবানি পশু কিনলেও এর আগে আলোচনায় আসেননি তিনি। এবার ভাইরাল ছাগল কিনে ভাইরাল হন মুশফিকুর রহমান ইফাত। তবে বিপাকে পড়েছেন তার বাবা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তা মতিউর রহমান। ভাইরাল হওয়ার পর থেকে তার পিতা কাস্টমস কর্মকর্তা মতিউর রহমানের আয়ের উৎস নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। মতিউর রহমান কাস্টমস বিভাগের ঢাকা-চট্টগ্রাম সহ বিভিন্ন স্থানে গুরুত্বপূর্ণ পদে চাকরি কালীন শত শত কোটি টাকার কামিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। 

আরও পড়ুন: আনোয়ার হোসেন মঞ্জুকে বিদেশ যেতে দেয়া হয়নি

সাদেক এগ্রো থেকে ক্রয় করার পর প্রথমে ছাগলটি ধানমন্ডির ৮ নাম্বার সড়কের ৪১/২ নম্বর বাসা ইমপেরিয়াল সুলতানা ভবনের নীচ তলায় রাখেন। এরপর সাক্ষাৎকারের জন্য যাওয়া হলে সেখান থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় ছাগলটি।

পাশাপাশি ইফাতের ফেইসবুক প্রোফাইল লক করে বন্ধ করে দেওয়া হয় তার ব্যবহৃত ফোন নাম্বারটি। সেই সঙ্গে নিষ্ক্রিয় করে ফেলেন তার হোয়াটসঅ্যাপ।

ইফাতের ধানমন্ডির বাসায় গেলে সেখানে থাকা নিরাপত্তা কর্মীরা বলেন, ছাগলটি মোহম্মদপুরের বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তবে চারটি গরুসহ কয়েকটি ছাগল সেখানে দেখতে পাওয়া গেছে। ইফাতের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে সুযোগ নেই বলে চলে যেতে বলেন নিরাপত্তা কর্মীরা।

তবে ইফাতের বক্তব্য না পাওয়া গেলেও ক্রয় করা প্রতিষ্ঠান সাদেক এগ্রোর কর্ণধার মো. ইমরান ক্রয়ের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ধানমন্ডির মুশফিকুর রহমান ইফাত ১২ লাখ টাকায় একটি ছাগল ও ১১ লাখ টাকায় একটি গরু ক্রয় করেছেন।    জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও কাস্টমসের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা কর্মচারীর সাথে কথা বলে জানা যায় মতিউর রহমানের গ্রামের বাড়ি বরিশালের মুলাদিতে। তার শ্বশুরবাড়ি নরসিংদীতে। তার অবৈধ উপার্জনে দুই এলাকার নিকট আত্মীয়রাই ফুল ফেফে উঠেছে। তার স্ত্রী একজন সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক। স্ত্রী ও সেলোকের নামে , ভাই বোন ভাগ্নি র নামে গড়ে তুলেছে বিপুল সম্পদ। নরসিংদীর আলোচিত ড্রিম হলিডে পার্কের মালিকও তাদের নামে রয়েছে বলে প্রচারণা আছে।