নকল বিজ্ঞাপনে হারাবেন আপনার টাকা

ফেসবুকে মোবাইল ফোন বিক্রির ফাঁদ

Abid Rayhan Jaki
বাংলাবাজার ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২:৫৬ অপরাহ্ন, ১২ জুলাই ২০২৪ | আপডেট: ৮:৫৪ পূর্বাহ্ন, ১২ জুলাই ২০২৪
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

আকর্ষণীয় শিরোনাম আর অস্বাভাবিক ছাড়ের লোভ দেখিয়ে ফেসবুকে চলছে প্রতারণার জাল। নামিদামি মোবাইল ফোন অর্ধেকেরও কম দামে বিক্রির বিজ্ঞাপন দিয়ে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে প্রতারক চক্র।

ফেসবুক স্ক্রল করলে প্রায়ই এমন বিজ্ঞাপন আসে। এমনকি ফ্ল্যাগশিপ ফোনও অফার করা হয় নামমাত্র দামে।বেশিরভাগ ভিডিওতে একই বিক্রেতার ছবি দেখা যায়। তবে ভিন্ন ভিন্ন পেইজে দেওয়া হয় বিজ্ঞাপন। যোগাযোগের জন্য দেওয়া মোবাইল নম্বরও আলাদা। এমন পোস্টে ভিউ লাখ-লাখ, শেয়ারও শত-শত। ভুয়া আইডি থেকে কমেন্ট করে, অনেকে মোবাইল পাওয়ার দাবিও করেন।

আরও পড়ুন: ইসির প্রাথমিক যাচাই-বাছাইয়ে উত্তীর্ণ এনসিপিসহ ১৬ দল

মোবাইল ফোন বিক্রিতে এমন বিপুল ছাড়ের লোভ দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে একটি চক্র। ফেসবুক পেইজে ভিডিও পোস্ট করে, প্রতারণার জাল বিছানো হচ্ছে। আস্থা অর্জনে ব্যবহার করা হয় অনেক জনপ্রিয় কনটেন্ট ক্রিয়েটরের নকল ভিডিও। এতে বিপাকে পড়ছেন কনটেন্ট ক্রিয়েটররা। পুলিশ বলছে, নজরদারির পরও এই প্রতারণা থামানো যাচ্ছে না। একটি পেইজ বন্ধ করলে, তৈরি হয় কয়েকটি।

ক্রেতা সেজে এমনই একটি বিজ্ঞাপনে দেওয়া ফোন নম্বরে কল করলে বলা হয়, মোবাইল পেতে চার্জ বাবদ অগ্রিম দিতে হবে ৫০০ টাকার বেশি।

আরও পড়ুন: পলাতক ৪০ পুলিশ কর্মকর্তার পদক প্রত্যাহার

বিক্রেতা মানিক সেই সময় ফোনে বলেন, ‘এগুলো ভারত থেকে বর্ডার দিয়ে নিয়ে আসা। ৫১০ টাকা অগ্রিম দিতে হবে।’ 

সাইফুল ইসলাম নামের এক ভুক্তভোগী জানান, ডেলিভারি চার্জ বাবদ টাকা পাঠানোর পর, নানা অজুহাতে আরও টাকা চাওয়া হয়। তিনি বলেন, ‘প্রথমে টাকা দিলাম ৫১০ টাকা। পরে বলতেসে যে কি জানি একটা পিনকোড লাগে। পিনকোড খোলার জন্য টাকা দিতে হবে।’ 

জনগণকে বোনাসের কথা বলে ফেইসবুকে দেওয়া বিজ্ঞাপন ভূয়া জনগণকে বোনাসের কথা বলে ফেইসবুকে দেওয়া বিজ্ঞাপন ভূয়া 

এমন প্রতারণায় মানুষের আস্থা অর্জনের জন্য, জনপ্রিয় কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের ভিডিও ব্যবহার করা হয়। এতে বিপাকে পড়েন তারা। প্রযুক্তিভিত্তিক কন্টেন্ট নির্মাতা আর. এস. স্যাম বলেন, ‘অনেকে মনে করেন, উনি (কনটেন্ট ক্রিয়েটর) যেহেতু এই প্রোডাক্ট নিয়ে কথা বলছে, তাহলে আমি কিনে নিই। তারা এটা চিন্তাও করে না যে ভিডিওটা আমি কোন প্ল্যাটফর্ম থেকে দেখছি। আদৌ কি আমি স্যাম জোন থেকে দেখছি, তার ফেইসবুক পেজ থেকে দেখছি নাকি অফিসিয়াল সাইটগুলো থেকে দেখছি।’ 

পুলিশ বলছে, নজরদারি চললেও বিপুল সংখ্যক পেইজের কারণে এসব প্রতারণা বন্ধ করা যাচ্ছে না। সিটিটিসির ডিসি (সাইবার ক্রাইম) আ ফ ম আল কিবরিয়া বলেন, ‘প্রতারকরাও অনেক স্মার্ট। অনেক সময় এই ফোন নম্বরগুলো ওপেন থাকে না। তখন এগুলোকে চিহ্নিত করা যায় না। আপনারা জানেন যে, আইনে বিটিআরসিকে ক্ষমতা দেওয়া আছে যে কোনো কনটেন্ট ব্লক করার। আমরা বিটিআরসিকে রিপোর্ট করি, বিটিআরসি আবার কনসার্ন সার্ভিস প্রোভাইডারকে রিপোর্ট করে ওই পেজ বা পোস্টগুলো বন্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা করে।’ 

এসব প্রতারণা ঠেকাতে সচেতনতা জরুরি বলে জানান আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা।