বিআইডব্লিউটিএ কার্যালয়ে তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ

ভারী বর্ষণ ও ভারত থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে দেশের ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় বন্যা দেখা দিয়েছে। এসব এলাকায় দ্রুত সরকারি-বেসরকারি স্পিড বোট পাঠানোসহ পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) সকাল ৬টায় মতিঝিলে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) কার্যালয়ে গিয়ে এ আহ্বান জানান তিনি।
উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, জাতির ক্রান্তিলগ্নে আপনারা নিজ নিজ অবস্থান থেকে নেমে পড়ুন। সকল বাহিনী উদ্ধার কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করুন। আপনাদেরকে যেন আর নির্দেশনা দেওয়া না লাগে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক ও সকল শ্রেণির মানুষকে তিনি এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগ আমলে ব্যাংক খাতে ব্যাপক লুটপাট ও অর্থপাচার: অর্থ উপদেষ্টা
এ সময় বন্যাদুর্গত এলাকায় দ্রুত সরকারি-বেসরকারি স্পিড বোট পাঠানোসহ পাঁচ দফা দাবির বাস্তবায়ন না হলে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) কার্যালয় থেকে যাবেন না বলে জানান তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম।
এদিকে দুর্গত এলাকাগুলোতে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা না করার অভিযোগে পাঁচ দফা দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ভোর ৪টায় মতিঝিলে বিআইডব্লিউটিএ কার্যালয়ের সামনে অবস্থান করেন। এক ঘণ্টা অবস্থানের পর শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে চেয়ারম্যান একজন প্রতিনিধি পাঠান। এ সময় তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম এসে নৌ-পরিবহন কন্ট্রোল অফিসের কার্যক্রম বন্ধ পেয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেন এবং জবাবদিহি নিশ্চিতের কথা জানান। পরে শিক্ষার্থীরা সাড়ে ৬টার দিকে অবস্থান ছেড়ে দেন।
আরও পড়ুন: সরকারকে এক মাস সময় দিলেন এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা
কর্তৃপক্ষকে উদ্দেশে নাহিদ ইসলাম বলেন, অনতিবিলম্বে সরকারি-বেসরকারি সকল বোট দুর্গত এলাকায় নিয়োজিত করতে হবে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে আহ্বান করে বলুন প্রধান উপদেষ্টা থেকে নির্দেশ আছে। এক ঘণ্টার মধ্যে কন্ট্রোল রুম চালু করুন। জাতীয় সংকটের সময় দায়িত্ব পালনে অবহেলা করেছে তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
নাহিদ বলেন, আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র কোনো ধরনের আলোচনা ছাড়াই বাঁধ খুলে দিয়ে বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। আমরা এর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। বাংলাদেশের বিপক্ষে যদি কোনো রাষ্ট্র দাঁড়ায় তাহলে বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা রুখে দিবে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কার্যালয় থেকে যাবেন না বলেও শিক্ষার্থীদের নিশ্চয়তা দেন তিনি।
শিক্ষার্থীদের পাঁচ দফা দাবি উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রিফাত আহমেদ। দাবিসমূহ:
১. সরকারি-বেসরকারি যত স্পিড বোট আছে এই মুহূর্তে বন্যা কবলিত স্থানে পাঠাতে হবে।
২. ছোট ছোট লঞ্চ বিভিন্ন পোর্টে যেগুলো আছে খুব দ্রুতই বন্যাকবলিত এলাকায় পাঠাতে হবে।
৩.বন্যায় উদ্ধার কাজে নিয়োজিত সব যানবাহনকে কর্তৃপক্ষ থেকে জরুরিভাবে জ্বালানি সরবরাহ করতে হবে।
৪. সব বেসরকারি ট্রলার ও স্পিড বোটকে এই ক্রান্তিলগ্নে ফ্রি করে দিতে হবে।
৫. যতদিন এই দূর্যোগ অবস্থা বিরাজমান থাকবে ততদিন ২৪ ঘণ্টাই কন্ট্রোল রুম থেকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে এবং প্রতিটি এলাকায় প্রতিনিধি পাঠাতে হবে।