সকল কারাগারে রেড অ্যালার্ট জারি
হাই সিকিউরিটি কাশিমপুর কারাগারে কয়েদিদের গোলযোগের চেষ্টা

৫ আগস্ট বর্তমান সরকারের পতন ঘটবে এমন তথ্য ছড়িয়ে দিয়ে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে কয়েদিরা বিদ্রোহের চেষ্টা করেছিল। এতে উদ্বুদ্ধ হয়ে কারাগারের সেল ভেঙে যথাসময়ে বেরিয়ে আসার আয়োজন করছিল মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তিন কয়েদি। তবে হঠাৎ করেই কারারক্ষীদের নজরে এলে তা ভেস্তে যায়।
কারাগারের ভেতরের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, সরকার পতনের সময় ফাঁসির অপেক্ষায় থাকা সব কয়েদি বের হয়ে আসবে এমন তথ্যে বাথরুমের টাইলস তুলে আংটা তৈরি করা এবং কম্বল ছিঁড়ে রশি তৈরি করেছিল কয়েকজন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কয়েদি। তথ্য ফাঁস হয়ে গেলে কারাগারের পক্ষ থেকে তা জানানো হয় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে। এ নিয়ে দিনভর উত্তেজনা চলে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার ও আশপাশের এলাকায়। সতর্ক করা হয় দেশের অন্যান্য কারাগারগুলোকেও।
আরও পড়ুন: আওয়ামী দোসররা বিদেশের মাটিতেও অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে: রিজভী
বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে এ খবর পেয়ে কারাগারের বাইরের নিরাপত্তা বাড়ায় গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ। বাড়ানো হয়েছে গোয়েন্দা তৎপরতাও। ভেতরে কাজ করছে কারাগারের গোয়েন্দারা। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, কারাবন্দি হাই প্রোফাইলের কিছু ব্যক্তি ৫ আগস্ট সরকার পতন হবে, তখন তাদেরকে বাইরে বেরিয়ে আসতে হবে এমন কথা ছড়িয়ে কারা বিদ্রোহে উদ্বুদ্ধ করা হয় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ডজনখানেক কয়েদিকে।
তবে কোন কোন হাজতি বা কয়েদি এই প্রচারণায় অংশ নিয়েছিলেন এবং তারা এই মিশন সফল করতে কাজ করেছেন, তাদের এখনো চিহ্নিত করা যায়নি। তবে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত কয়েকজন আসামি চিকিৎসার জন্য কারাগারের বাইরে হাসপাতালে গিয়েছিল। সেখানে তারা শুনেছে ৫ তারিখ থেকে ৮ তারিখের মধ্যে আবার ৫ই আগস্টের মতো গোলযোগ হয়ে সরকার পতন ঘটবে। এর সুযোগে তারাও কারা বিদ্রোহ করে মুক্তি পেয়ে পালিয়ে যাবে। কারা কর্তৃপক্ষ তিন বন্দিকে আটক করে তাদেরকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। এর সঙ্গে কারাগারের ভিতরে বা বাইরের আওয়ামী লীগের কোনো ইন্ধন আছে কিনা, খতিয়ে দেখা হচ্ছে। গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কারাগারের পক্ষ থেকে মামলা দেওয়া হলে বিষয়টি তদন্তের মাধ্যমে তারা বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবেন।
আরও পড়ুন: সিভিল এভিয়েশন একাডেমিতে যুক্তরাজ্যের সহযোগিতায় ICAO National Inspectors Course সম্পন্ন
এদিকে কারা অধিদপ্তরের সহকারী কারা মহাপরিদর্শক জান্নাতুল ফরহাদ বাংলাবাজার পত্রিকাকে জানান, দেশের কারাগার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। কিছুটা গোলযোগের চেষ্টা করেছিল কয়েকজন দণ্ডপ্রাপ্ত বন্দি। তারা জঙ্গি বা কোনো রাজনৈতিক সংশ্লিষ্ট আসামি নয়। তারা হত্যা মামলার আসামি। এটা কোনো সংঘবদ্ধ বিদ্রোহের চেষ্টা নয়, ব্যক্তিগতভাবে যোগাযোগ করে সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করেছিল। সারাদেশের কারাগারগুলোতে এমনিতেই বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে। কারাগারগুলো সর্বদা যত্নের বিষয়ে তৎপর আছে।
এদিকে কাশিমপুর কারা কমপ্লেক্স এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সকাল থেকেই পুলিশ পুরো কারাগার এলাকা ঘিরে রেখেছে।