২০০ কোটি টাকা পাচারে অভিযুক্ত

সাউথইস্ট ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও পরিচালকের বিদেশ পালানোর চেষ্টা

Sanchoy Biswas
বিশেষ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ৫:৩৯ অপরাহ্ন, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ৮:৪৩ অপরাহ্ন, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা সাউথইস্ট ব্যাংকের চেয়ারম্যান আলমগীর কবির ও তার পুত্র পরিচালক রায়হান কবিরের বিরুদ্ধে অবৈধ উপার্জিত দুইশত কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগ তদন্তে প্রমাণ পেয়েছে। আইনি শাস্তি থেকে বাঁচতে তারা গোপনে দেশত্যাগের চেষ্টা করছে।

সূত্র জানিয়েছে, সম্প্রতি আলমগীর কবির ও রায়হান কবির চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে বিদেশে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। তবে আদালতের জারি করা দেশত্যাগ নিষেধাজ্ঞার কারণে তারা সফল হননি। এ বিষয়ে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষও নিশ্চিত করেছে যে তাদের দেশত্যাগ রোধে পুলিশের বিশেষ শাখার কড়া নির্দেশনা রয়েছে।

আরও পড়ুন: টয়লেট পরিচালনা প্রশিক্ষণে বিদেশ যাচ্ছেন ৩ কর্মকর্তা

বিএফআইইউর প্রতিবেদনে বলা হয়, রায়হান কবির দেশবন্ধু গ্রুপ ও জারা জামান টেকনোলজির নামে এলসি খুলে প্রায় ১৯৪ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। এর মধ্যে সিঙ্গাপুরভিত্তিক ‘আর অ্যান্ড এন হোল্ডিংস পিটিই লিমিটেড’-এ বিপুল অঙ্কের অর্থ স্থানান্তরের তথ্য পাওয়া গেছে।

এছাড়া রায়হান কবিরের বিরুদ্ধে ঋণ জালিয়াতি, অতিরিক্ত সুদ মওকুফ, ১০ টাকার শেয়ার ২৫ টাকায় কেনাসহ নানা অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া গেছে। প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, তৎকালীন চেয়ারম্যান আলমগীর কবির বিনিয়োগ কমিটিকে পাশ কাটিয়ে অনুমোদন ছাড়াই বিনিয়োগ করেন এবং শেয়ার কেনাবেচার আড়ালে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন।

আরও পড়ুন: ৩৯ পরিদর্শককে সহকারী পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি

গত ৪ আগস্ট দুদকের আবেদনের ভিত্তিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. জাকির হোসেনের আদালত আলমগীর কবির ও রায়হান কবিরের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। আদালতের নথিতে বলা হয়, ক্ষমতার অপব্যবহার, স্বজনপ্রীতি ও অর্থ পাচারের অভিযোগে চলমান অনুসন্ধানের স্বার্থে তাদের দেশত্যাগ রোধ জরুরি।

দুদক তাদের একাধিকবার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করলেও তারা হাজির হননি। বর্তমানে তাদের মোবাইল ফোনও অধিকাংশ সময় বন্ধ থাকে। গণমাধ্যমকর্মীদের বার্তায়ও তারা কোনো সাড়া দেননি।

বিএফআইইউর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আলমগীর কবির ও রায়হান কবির ছাড়াও ব্যাংকের তৎকালীন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, ক্রেডিট কমিটি, ট্রেজারি বিভাগ, ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকিং বিভাগ ও সংশ্লিষ্ট শাখার কর্মকর্তারা এসব অনিয়মে সহযোগিতা করেছেন।

বর্তমানে দুদক ও বিএফআইইউর তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, দেশত্যাগের চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ায় এখন তাদের বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়া দ্রুত এগিয়ে যাবে।