আজ ঢাকার বাতাস খুব অস্বাস্থ্যকর

বায়ুদূষণের কারণে দীর্ঘদিন ধরেই চরম স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে বাস করছে রাজধানীর মানুষ। বাইরে বের হলেই নিঃশ্বাসের সঙ্গে চরম অনিরাপদ বাতাস গ্রহণ করে যেতে হচ্ছে রাজধানীবাসীকে। শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত রোগে প্রতিনিয়তই ভিড় বাড়ছে ঢাকার হাসপাতালগুলোতে, যার পেছনে সবচেয়ে বেশি দায়ী এই দূষিত বাতাস। যানবাহন ও শিল্পকারখানার কালো ধোঁয়ার কারণে বিশ্বব্যাপী দূষিত বাতাসের শহরগুলোর মধ্যে প্রতিদিনই প্রথমদিকে জায়গা করে নিচ্ছে ঢাকা, যার ব্যতিক্রম ঘটেনি আজও।
বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টার দিকে আন্তর্জাতিক বায়ুমান প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের দূষিত বাতাসের শহরগুলোর তালিকায় শীর্ষে অবস্থান করছে ঢাকা। সবশেষ আপডেট অনুযায়ী, এখানকার দূষণ স্কোর রেকর্ড হয়েছে ২৪১। অর্থাৎ, খুবই অস্বাস্থ্যকর আজ দেশের রাজধানীর বাতাস।
আরও পড়ুন: যেমন থাকবে আজকের ঢাকার আবহাওয়া
দূষিত শহরের তালিকায় ঢাকার পরেই অবস্থান করছে পাকিস্তানের লাহোর। আইকিউএয়ারের মানদণ্ড অনুযায়ী, এ শহরটির বাতাসও খুব অস্বাস্থ্যকর; দূষণ স্কোর ২১১। তালিকার তৃতীয় ও চতুর্থ স্থানে অবস্থান করছে ভারতের দিল্লি ও নেপালের কাঠমন্ডু। শহর দুটির দূষণ স্কোর আইকিউএয়ার স্কোর যথাক্রমে ১৯০ ও ১৮১। এছাড়া ১৭০ স্কোর নিয়ে দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় পঞ্চম স্থানে আছে ইরাকের বাগদাদ।
মূলত, একিউআই স্কোর শূন্য থেকে ৫০ ভালো হিসেবে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০ মাঝারি হিসেবে গণ্য করা হয়, আর সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর বিবেচিত হয় ১০১ থেকে ১৫০ স্কোর। স্কোর ১৫১ থেকে ২০০ হলে তাকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ বায়ু বলে মনে করা হয়। ২০১ থেকে ৩০০-এর মধ্যে থাকা একিউআই স্কোরকে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ বলা হয়। এ অবস্থায় শিশু, প্রবীণ এবং অসুস্থ রোগীদের বাড়ির ভেতরে এবং অন্যদের বাড়ির বাইরের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে। এ ছাড়া ৩০১ থেকে ৪০০-এর মধ্যে থাকা একিউআই ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ বলে বিবেচিত হয়, যা নগরের বাসিন্দাদের জন্য গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।
আরও পড়ুন: ঢাকায় তাপমাত্রা বাড়ছে, থাকতে পারে হালকা বৃষ্টি
বাংলাদেশে একিউআই নির্ধারণ করা হয় দূষণের পাঁচটি বৈশিষ্টের ওপর ভিত্তি করে- বস্তুকণা (পিএম-১০ ও পিএম-২.৫), এনও২, সিও, এসও২ এবং ওজোন (ও৩)। বস্তুকণা পিএম-২.৫ হলো বাতাসে থাকা সব ধরনের কঠিন এবং তরল কণার সমষ্টি, যার বেশিরভাগই বিপজ্জনক। মানব স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক বিভিন্ন ধরনের রোগ যেমন, প্রাণঘাতী ক্যান্সার এবং হৃদযন্ত্রের সমস্যা তৈরি করে পিএম-২.৫। এছাড়া বায়ু দূষণকারী এনও২ প্রধানত পুরোনো যানবাহন, বিদ্যুৎ কেন্দ্র, শিল্প স্থাপনা, আবাসিক এলাকায় রান্না, তাপদাহ এবং জ্বালানি পোড়ানোর কারণে তৈরি হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, শুধুমাত্র বায়ু দূষণের কারণে প্রতি বছর প্রায় ৭০ লাখ মানুষের প্রাণহানি ঘটে বিশ্বজুড়ে।