স্কুলের পরিত্যক্ত ভবনটিতে পাঠদান
অবশেষে জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পেল প্রাথমিক বিদ্যালয়টি

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার কাশিমাড়ী ইউনিয়নের ৬নং শংকরকাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি বছরে ৫ মাস পানিতে ডুবে থাকতো। উপজেলা নির্বাহী অফিসার রনি খাতুনের হস্তক্ষেপে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা হয়েছে। এখন বিদ্যালয়টি জলাবদ্ধতা মুক্ত।
গত ২৪ শে আগস্ট বাংলাবাজার প্রতিনিধি বিদ্যালয়টি সরজমিনে পরিদর্শনে গিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি লাইভ করেন। পরবর্তীতে ২৬ শে আগস্ট বাংলাবাজার পত্রিকায় নিউজ প্রকাশিত হয়। বিদ্যালয়ের জলাবদ্ধতার বিষয়টি শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার রনি খাতুনের দৃষ্টি আকর্ষণ হয়।
আরও পড়ুন: গোয়ালন্দে লাশ পোড়ানোর ঘটনায় কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না: ঢাকা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি
সংবাদ প্রকাশের পর শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার রনি খাতুন মহোদয় ৬নং শংকরকাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি সরজমিনে পরিদর্শন করেন। তিনি স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ স্কুলের শিক্ষক এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে তৎক্ষণাৎ আলোচনা করে সমস্যার সমাধান বের করেন। অতঃপর তিনি তার কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করেন এবং দ্রুত কাজ শুরু করার নির্দেশ দেন।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ইউএনও মহোদয় এখানে পরিদর্শনে এসে সবার সাথে আলোচনা করে বিদ্যালয়ের পানি নিষ্কাশনের জন্য বিদ্যালয়ের মাঠ প্রাঙ্গণ হতে পার্শ্ববর্তী বিল পর্যন্ত পাইপ লাইনের ব্যবস্থা করে দেবেন বলে তৎক্ষণাৎ এলাকাবাসী, শিক্ষক, ছাত্র সবাইকে আশ্বস্ত করেন। এরপর দুই দিনের ভিতর মাটি খননের কাজ শুরু হয়। মাটি খননের কাজ শেষ হলে সেখানে পাইপ স্থাপন করা হয়। তারপর থেকে বিদ্যালয়ের মাঠ হতে পানি নিঃসরণ হতে শুরু করে। এখন বিদ্যালয়টি সম্পূর্ণ জলাবদ্ধতা মুক্ত। শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জনাব রনি খাতুনের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। এখন আর ছোট ছোট স্কুলগামী বাচ্চাদের পানিতে ভিজে স্কুলে যেতে হবে না।
আরও পড়ুন: গোপালগঞ্জে আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস উদযাপন
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) সকালে বিদ্যালয়টিতে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় বিদ্যালয়টি সম্পূর্ণ জলাবদ্ধতা মুক্ত হয়েছে। মাঠের পানি সরে গেছে, পরিত্যক্ত ভবনটি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে পাঠদানের উপযোগী করা হয়েছে। ১টি শ্রেণিকক্ষে ২য় শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীরা অবস্থান করছে। স্কুলে ছাত্র-ছাত্রীদের হাস্য উজ্জ্বল উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো। এখন আর বারান্দায় ক্লাস করতে হচ্ছে না। স্কুলটির কার্যক্রম স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এসেছে। শিক্ষক, ছাত্র, অভিভাবক সবাই খুশি।
বিদ্যালয়ে উপস্থিত এক ছাত্রের গার্ডিয়ান আসমা খাতুন বলেন, আমরা খুশি যে স্কুলের মাঠের জল সরে গেছে। ধন্যবাদ রনি খাতুন মহোদয়কে। এবং আপনার (বাংলাবাজার প্রতিনিধি) মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর এটি কতৃপক্ষের নজরে আসে। তবে আপনার মাধ্যমে জানাতে চাই রনি খাতুন মহোদয় যেনো স্কুলের মাঠটিতে মাটি ভরাট করা হয়। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে একই দাবি করেন অনিমা রানি ও বিলকিস খাতুন।
স্থানীয় সাইফুল ইসলাম বলেন, আমরা এলাকাবাসী খুব খুশি যে আমাদের স্কুলটির কয়েক বছরের সমস্যার সমাধান হওয়ায়। ধন্যবাদ রনি খাতুন মহোদয়কে, তিনি নিজে এসে সমস্যা সমাধান করেছেন। এখন বাচ্চাদের স্কুলে আসা-যাওয়া করতে আর কষ্ট হচ্ছে না। এখন আর স্কুলে কোনো বাচ্চা অসুস্থ হবে না। পাশাপাশি স্কুল মাঠে বাচ্চারা নিয়মিত খেলাধুলা করতে পারবে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রউফ জানান, আমরা খুব খুশি যে বাচ্চারা সুন্দরভাবে স্কুলে আসা-যাওয়া করতে পারছে। পরিত্যক্ত ভবনটি আমরা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে পাঠদানের উপযোগী করেছি এবং নিয়মিত সেখানে পাঠদান হচ্ছে। আর এজন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি ইউএনও মহোদয় রনি খাতুনের প্রতি, যিনি আমাদের দীর্ঘদিনের সমস্যার সমাধান করেছেন। পাশাপাশি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সহ আপনি এবং আপনার বাংলাবাজার পত্রিকার জন্য শুভকামনা রইল।