রূপগঞ্জে আখের বাম্পার ফলন, সাথী ফসলেও দ্বিগুণ লাভ

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলায় চলতি বছর আখ চাষে বাম্পার ফলন হয়েছে। আখের পাশাপাশি মরিচ, ফুলকপি, টমেটোসহ সাথী ফসল চাষ করে দ্বিগুণ আয় করছেন কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর উপজেলার জাঙ্গীর, দাউদপুর, ভোলাব ও হাটাবো এলাকায় প্রায় ৬১ হেক্টর জমিতে ঈশ্বরদি সিক্সটিন, বাসটে নাই, লতারিজবা ও সূর্যমুখী এই চার জাতের আখ চাষ করা হয়েছে। তবে গত কয়েক বছরে জমি প্রস্তুত, সার, বীজ ও শ্রমিকের খরচ বেড়ে যাওয়ায় আখের আবাদ কমে গিয়েছিল।
আরও পড়ুন: নাজিরপুরে শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রস্তুতিমূলক সভা
কৃষকরা জানান, আগে সহজেই শ্রমিক পাওয়া গেলেও এখন শ্রমিক সংকট ও মজুরি বেশি হওয়ায় আখ চাষে অনেকেই নিরুৎসাহিত ছিলেন। তবে এবার উপজেলা কৃষি অফিসের উদ্যোগে প্রশিক্ষণ, পরামর্শ ও কারিগরি সহায়তা পাওয়ায় নতুন করে আখ চাষে আগ্রহী হচ্ছেন তারা।
কৃষকদের হিসাবে, এক বিঘা জমিতে আখ চাষে খরচ হয় ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকা। মৌসুম শেষে আখ বিক্রি করে আয় হয় ৬০ থেকে ৮০ হাজার টাকা। এর সঙ্গে সাথী ফসল হিসেবে মরিচ, ফুলকপি ও টমেটো বিক্রি করে আরও ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা আয় হচ্ছে। ফলে এক বিঘা জমি থেকে মোট এক লাখ থেকে এক লাখ বিশ হাজার টাকা পর্যন্ত লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা।
আরও পড়ুন: পিরোজপুর জেলা বিএনপির নতুন কমিটিকে জামায়াতের শুভেচ্ছা
দাউদপুরের কৃষক আব্দুল হালিম বলেন, ‘আগে আখ চাষ করতে গিয়ে লোকসান হতো। কিন্তু এবার কৃষি অফিসের প্রশিক্ষণ নিয়ে আখ লাগিয়েছি। আখের সঙ্গে মরিচ ও ফুলকপি করেছি, অনেক ভালো ফলন হয়েছে। এবার লাভের মুখ দেখছি।’
জাঙ্গীর এলাকার কৃষক নজরুল ইসলাম বলেন, ‘শ্রমিকের দাম বেশি হলেও সঠিক পরিকল্পনায় আখ লাভজনক ফসল। সাথী ফসল থেকে আয় হওয়ায় স্বস্তি পাচ্ছি।’
রূপগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আফরোজা সুলতানা বলেন, ‘আখ আমাদের দেশের অন্যতম লাভজনক ফসল। তবে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার ছাড়া কৃষকরা সঠিক ফলন পাচ্ছিলেন না। এবার আমরা প্রশিক্ষণ দিয়েছি, যাতে জমির সর্বোত্তম ব্যবহার হয়। সাথী ফসল হিসেবে সবজি চাষে কৃষকরা দ্বিগুণ আয় করছেন। আগামী বছর রূপগঞ্জে আখ চাষ আরও বাড়বে বলে আমরা আশা করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আখ শুধু কৃষকদের জন্য নয়, দেশের চিনিশিল্পের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। সরকারিভাবে প্রণোদনা বাড়ানো হলে আখ চাষ আবারও ব্যাপক হারে শুরু হবে।’
কৃষিবিদরা মনে করেন, বাংলাদেশের আবহাওয়া আখ চাষের জন্য উপযোগী। তবে আধুনিক প্রযুক্তি, মানসম্মত বীজ, সহজলভ্য সার ও যান্ত্রিক সুবিধা নিশ্চিত হলে কৃষকরা আরও উৎসাহিত হবেন।