বাঁশখালীতে লবণের মাঠ দখল নিয়ে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ১৬

Sadek Ali
রিয়াদুল ইসলাম রিয়াদ, বাঁশখালী প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ২:০২ অপরাহ্ন, ০৭ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ১:১৪ অপরাহ্ন, ১৩ অক্টোবর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার সরল ইউনিয়নে পুনরায় সরকারি খাসজমি নিয়ে আধিপত্য বিস্তার, লবণমাঠ ও চিংড়ি ঘের দখল নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ছররা গুলিতে উভয়পক্ষের চারজন গুলিবিদ্ধসহ ১৬ জন আহত হয়েছেন। 

গতকাল (৭ অক্টোবর) সোমবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত উপজেলার সরল ইউনিয়নের পশ্চিম সরল এলাকায় দফা দফায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ছররা গুলিতে আবু তাহের (৫০), সাইদুল ইসলাম (১৬), নুরুল আবছার (১৫) ও মোহাম্মদ রুবেল (২০) নামে চারজন গুরুতর আহত হন। তাদের বাঁশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে অবস্থা গুরুতর হওয়ায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

আরও পড়ুন: চুয়াডাঙ্গায় মদপানে ৬ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে আরও ১

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, ‘সোমবার সন্ধার পর সরল নতুন বাজার এলাকায় কোন কারণ ছাড়াই দু'পক্ষের মধ্যে  ইটপাটকেল ও গোলাগুলি হয়। এতে ছররা গুলিতে উভয় পক্ষের চারজন গুলিবিদ্ধসহ ১৬/১৮ জন আহত হয়েছেন। কয়েক ঘন্টাব্যাপী এ সংঘর্ষ চলে। এ সময় ব্যাপক গোলাগুলি হলে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে জড়ানো দু'পক্ষের একটি নেতৃত্বে রয়েছেন আবুল মনসুর ও অন্যটির কবির আহমদ। এ দু'পক্ষ এলাকায় ‘মনসুর গ্রুপ’ ও ‘কবির গ্রুপ’ নামে পরিচিত।'

জানতে চাইলে মনসুর গ্রুপের দেলোয়ার বলেন, ‘মাগরিবের পর বিনা উস্কানিতে সরল নতুন বাজার এলাকায় আমাদের উপর প্রথমে ইটপাটকেল পরে গুলি করে কবির গ্রুপের লোকজন। এতে আমাদের ৪/৫ জন গুলিবিদ্ধসহ ১৩ জন আহত হয়। বিষয়টি অস্বীকার করে কবির গ্রুপের কবির বলেন, ‘কোন কারণ ছাড়াই তারা আমাদের উপর হামলা করে। সরকারি খাসজমি দখল করতে না পেরে এলাকার নিরীহ মানুষের উপর হামলা চালাচ্ছে মনসুর গ্রুপ।'

আরও পড়ুন: বাংলাদেশকে সত্যিকার অর্থে উৎপাদনশীল করতে হলে দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে: ড. মঈন খান

স্থানীয়রা জানান, ‘এলাকায় মনসুর গ্রুপ ও কবির গ্রুপের মারামারিতে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। তাদের দুই গ্রুপের হাতে অসংখ্য অবৈধ অস্ত্র রয়েছে। আধিপত্য বিস্তার ও দখল নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বেশ কয়েকবার সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। যা দেশব্যাপী আলোচনা হয়। প্রশাসন কোনরূপ ব্যবস্থা না নেওয়ায় তারা দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠতেছে। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও জলদস্যুদের গ্রেফতারের দাবি জানান স্থানীয়রা।'

বাঁশখালী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত ডা. সৌরভ দেব বলেন, 'রাত আনুমানিক ১০টার দিকে গুলিবিদ্ধ চারজনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাঁদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আহতদের শরীরে একাধিক ছররা গুলি রয়েছে।'

বাঁশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘বঙ্গোপসাগর উপকূলবর্তী সরকারি খাসজমিতে চিংড়িঘের ও লবণ মাঠ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে প্রায়ই মারামারির ঘটনা ঘটে। গতকাল রাতেও দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে কয়েকজন আহত হন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ ঘটনায় এখনো পর্যন্ত কেউ কোনো অভিযোগ দেননি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’