সন্ত্রাসী হুমকিতে পালিয়ে বেড়াচ্ছে বিশ্বজিৎ পরিবার
আদালতের নির্দেশ অমান্য করে সাভারে জোর পুর্বক কারখানা দখল

কয়েকজন প্রভাবশালী ক্ষমতাধর নেতার প্রত্যক্ষ মদদে সাভারে দিনদুপুরে একটি কারখানা দখলের অভিযোগ উঠেছে। আদালতের স্থিতাবস্থা থাকার পরও বেঙ্গল ফাইন সিরামিক লিমিটেড নামে ওই প্রতিষ্ঠানটি দখলে নেয় সি পার্ল গ্রুপ। দখলের সময় ভুক্তভোগীরা পুলিশের সহযোগিতা চেয়েও পাননি। ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত থাকলেও তারা ছিল নিশ্চুপ। এদিকে সন্ত্রাসীদের হুমকিতে মুল মালিক বিশ্বজিৎ পরিবার সাভারে প্রবেশ করতে পারছেন না।
সাভার পৌর এলাকার ভাগলপুরে বেঙ্গল ফাইন সিরামিক লিমিটেড কারখানায় গত রোববার এমন ঘটনা ঘটে। কারখানা দখলের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করার সময় সন্ত্রাসীদের হামলায় আহত হন সাভারে কর্মরত দ্য ডেইলি স্টারের সংবাদদাতা ও বেসরকারি নাগরিক টেলিভিশনের প্রতিনিধি আকলাকুর রহমান আকাশ।
আরও পড়ুন: গাজীপুরে সাংবাদিক তুহিন হত্যা: আরও দুইজন গ্রেপ্তার, মোট গ্রেপ্তার ৭
বেঙ্গল ফাইন সিরামিক লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক অভিজিৎ রায় বাংলাবাজার পত্রিকাকে বলেন, আদালতের আদেশ থাকা সত্তেও হামলাকারীরা অবৈধ ভাবে প্রতিষ্টানে প্রবেশ করে। এবং জোরপুর্বক কারখানায় কর্মরত নিরাপত্তারক্ষী এবং কর্মকর্তা, কর্মচারীদের বের করে দেয়। এ সময় তথ্য সংগ্রহ করতে যাওয়া সাংবাদিকদেরও মারধর করে দখলকারীরা।
তিনি আরও বলেন, আদালতের দুটি পৃথক স্টে অর্ডার এবং দুটি রায় থাকার পড়েও ক্ষমতাশীলরা এসব এর কোন তোয়াক্কা করে নি।
আরও পড়ুন: গাজীপুরে সাংবাদিক তুহিন হত্যায় স্বামী-স্ত্রীসহ চারজন গ্রেপ্তার
তিনি বলেন, জোর করে আমাদের প্রতিষ্ঠানটি সি পার্ল গ্রুপ দখল করে নিয়েছে। বেঙ্গল ফাইন সিরামিক লিমিটেড মোটা অঙ্কের দায় মাথায় নিয়ে ২০০৭ সালে বন্ধ হয়। এরপর আমরা একটি চুক্তির মাধ্যমে কোম্পানির ২৪ দশমিক ২৯ শতাংশ স্পন্সর শেয়ার কিনে এজিএমের মাধ্যমে কোম্পানি পরিচালনার দায়িত্ব নিই। এরপর কিছু সমস্যা থাকলেও কারখানাটিতে ২০১৯ সালে কার্যক্রম শুরু করা হয়।
অভিজিৎ অভিযোগ করেন, স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মীসহ কয়েকশ সন্ত্রাসী নিয়ে সি পার্ল গ্রুপের কর্মকর্তারা কারখানা দখল করে নেয়। তারা আমাদের সব নিরাপত্তারক্ষী, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের বের করে দেয়। অভিজিৎ রায় জানান, এর আগে ২০১৬ সালে চুক্তি ভঙ্গের অভিযোগ তুলে আগের মালিকপক্ষ কোম্পানির মালিকানা দাবি করে আদালতে একটি মামলা করে। ওই মামলায় তার বাবা বিশ্বজিৎ কুমারকেই কারখানা পরিচালনার নির্দেশ দেন উচ্চ আদালত। ওই মামলা এখনো নিম্ন আদালতে চলমান। এরই মধ্যে গত বছর আগের মালিকপক্ষ বিক্রীত শেয়ার আবার সি পার্ল গ্রুপের মালিকপক্ষের কাছে বিক্রি করে। শেয়ার কেনার পর সি পার্ল গ্রুপের লোকজন একাধিকবার কারখানাটি দখলের চেষ্টা করে।
দখল ঠেকাতে এবং আইনি সহায়তা পেতে অভিজিৎ রায় আদালতের মাধ্যমে ১৪৫ ধারার আদেশ আনেন। আদালতের ওই আদেশ উপেক্ষা করেই রোববার কারখানাটি দখল করে সি পার্ল গ্রুপের লোকজন।
এদিকে ঢাকা স্টক এক্সচেইঞ্জের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে গেলে দেখা যায় বেঙ্গল ফাইন সিরামিক লিমিটেড এর সর্বশেষ মালিকানা শেয়ার লেনদেন হয়েছিল ২০১৩ সালের সেপ্টেবরের ৪ তারিখে এবং সেটি হস্তানতর হয়েছিল বিশ্বজিৎ কুমার রায় এর আমলে। এর পর আর কোন লেনদেন বা হস্তান্তরের রিপোর্ট অফিসিয়াল ওয়েবসিয়াটে পাওয়া যায়নি।