৩০ দিনের মধ্যে অনুমোদন না নিলে আইনি ব্যবস্থা

আশিয়ান সিটির প্লট বিক্রি ও বিজ্ঞাপন বন্ধের নির্দেশ

Any Akter
বিশেষ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ৫:৫৮ অপরাহ্ন, ১৬ অগাস্ট ২০২৫ | আপডেট: ৬:১৯ অপরাহ্ন, ১৬ অগাস্ট ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনার আলোকে ‘আশিয়ান ল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড’-এর অধীনে পরিচালিত আশিয়ান সিটি প্রকল্পে অনুমোদন ছাড়া পরিচালিত সব ধরনের বিজ্ঞাপন, বিক্রয় ও প্রচার-প্রচারণা কার্যক্রম অবিলম্বে বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে। একইসঙ্গে ৩০ দিনের মধ্যে প্রকল্পের সীমানা নির্ধারণ ও অনুমোদনের জন্য প্রয়োজনীয় সব নথিপত্র রাজউকের কাছে জমা দেওয়ার জন্য প্রতিষ্ঠানটিকে আলটিমেটাম দেওয়া হয়েছে।

রাজউকের পক্ষ থেকে পাঠানো নোটিশে উল্লেখ করা হয়, ঢাকা জেলার দক্ষিণখান থানা এলাকার দক্ষিণখান মৌজায় প্রতিষ্ঠিত আশিয়ান সিটি প্রকল্প এখনো রাজউকের অনুমোদন পায়নি। সুপ্রিম কোর্টের অনুমোদিত ৩৩ (তেত্রিশ) একর আবাসিক এলাকা উন্নয়নের নির্দেশ থাকলেও বর্তমানে প্রকল্প এলাকায় সাইনবোর্ড, বিলবোর্ড, অনলাইন ও বিভিন্ন মাধ্যমে বিক্রয় কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে, যা আইনত সম্পূর্ণ অবৈধ।

আরও পড়ুন: ভোলাগঞ্জে লুট হওয়া সাদা পাথর ফেরত ও লুটকারীদের তালিকা দাখিলের নির্দেশ হাইকোর্টের

নোটিশে বলা হয়, বেসরকারি আবাসিক প্রকল্পের ভূমি উন্নয়ন বিধিমালা, ২০০৪ (সংশোধিত ২০১১ ও ২০১৫) অনুযায়ী কোনো প্রকল্পে উন্নয়ন কাজ শুরু বা জমি বিক্রির আগে রাজউকের পূর্ণাঙ্গ অনুমোদন গ্রহণ বাধ্যতামূলক। অনুমোদন ছাড়া কোনো প্লট বিক্রি, হস্তান্তর বা বিজ্ঞাপন প্রচার করলে ২০১০ সালের রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা আইন অনুযায়ী ন্যূনতম ১০ লাখ টাকা জরিমানা বা ৩ বছরের কারাদণ্ড কিংবা উভয় দণ্ড হতে পারে।

রাজউকের নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, অনুমোদনহীন এসব কার্যক্রম বন্ধ না করলে এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় নথিপত্র জমা না দিলে আশিয়ান ল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এর মধ্যে রয়েছে—প্রকল্প এলাকার সব ধরনের সাইনবোর্ড, বিলবোর্ড, অনলাইন প্রচার এবং বিক্রয় কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া, জরিমানা আদায় এবং আইন অনুযায়ী অন্যান্য দণ্ড প্রয়োগ।

আরও পড়ুন: ভোলাগঞ্জে সাদা পাথর লুট: দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা চেয়ে হাইকোর্টে রিট

রাজউক জানিয়েছে, প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণ আইন, ২০০০; রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০; এবং বেসরকারি আবাসিক প্রকল্পের ভূমি উন্নয়ন বিধিমালা, ২০০৪ (সংশোধিত ২০১১ ও ২০১৫) অনুযায়ী আশিয়ান সিটি প্রকল্পের জন্য সব শর্ত পূরণ করলেই কেবল অনুমোদন দেওয়া হবে। এর আগে কোনো ধরনের বিক্রয়, প্রচার বা উন্নয়ন কার্যক্রম চলতে পারবে না।

রাজউকের নোটিশটি পাঠানো হয়েছে আশিয়ান ল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে, যাতে অবিলম্বে আইন মেনে কার্যক্রম পরিচালনার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায় আদালত ও  সরকার নির্দেশে   প্রতারণা ও জালিয়াতি'র অভিযোগে আশিয়ান সিটির আবাসন  প্রকল্পের কার্যক্রম দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল। তাদের বিরুদ্ধে  জালিয়াতি করে জমি ক্রয় বিক্রির অভিযোগ উঠেছিল।  ৫ আগস্টের পর রাজনৈতিক অস্থিরতা ও প্রশাসনিক দুর্বতার সুযোগ নিয়ে নতুন করে জমি দখল ও জালিয়াতীর মাধ্যমে কাজ শুরু করেছিল। এলাকাবাসীর অভিযোগের ভিত্তিতে উচ্চ আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নিয়েছে।