শীতের আমেজ শুরু, ভাসছে পিঠার ঘ্রাণ
দেশজুড়ে ‘মৌসুমী পিঠার দোকান’ জমে উঠেছে
শীতের আগমনী বার্তায় রাজধানী ঢাকাসহ দেশজুড়ে ভাসছে পিঠার ঘ্রাণ। এই মৌসুমী পিঠার দোকানগুলো হেমন্তের হালকা ঠান্ডা হাওয়া আর কুয়াশার ছোঁয়ায় জমে উঠেছে। গ্রাম কিংবা শহরের আনাচে-কানাচে ও বাসস্ট্যান্ড এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে বসেছে ভ্রাম্যমাণ পিঠার দোকান। প্রতিদিন বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত চলছে ধোঁয়া ওঠা গরম পিঠার বেচাকেনা।
সরেজমিনে দেখা যায়, শীতের আগমনের সাথে সাথে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ‘মৌসুমী পিঠার দোকান’ জমে উঠেছে। ডেমরার স্টাফ কোয়াটার-যাত্রাবাড়ি, শ্যামপুর-কদমতলী, সায়েদাবাদ, গুলিস্তান, সদরঘাট, হাজারীবাগ-লালবাগ এবং অভিজাত এলাকাখ্যাত ধানমণ্ডি ৩২, সোবাহানবাগ, কলাবাগান, কারওয়ানবাজার, ফার্মগেট, কাজীপাড়া, মিরপুর, মহাখালী, বাংলামোটর, শাহাবাগ-টিএসসির মোড়, প্রেসক্লাব, সেগুনবাগিচা, বিজয়নগর, ফকিরাপুল, সবুজবাগ-খিলগাঁও, মালিবাগ, রামপুরা ও বনশ্রীসহ বিভিন্ন স্থানে রাস্তার ফুটপাতে প্রায় মোড়ে শীতের সন্ধ্যায় মানুষ আয়েশ করে পিঠা খেতে যান। এ ছাড়া পুরান ঢাকার নাজিরাবাজারেও রয়েছে বেশ কিছু পিঠাপুলির দোকান। মৌসুমি চিতই ভাপা, পাটিসাপটা, কুসুমকলি, আমদেশা ও পুলি পিঠা ছাড়াও বিভিন্ন রকমের নারিকল পুলি পাওয়া যায় এখানকার দোকানগুলোতে। তবে সবচেয়ে বেশি পিঠার ভীড়জমে রুপগঞ্জের তিনশ ফিট নিলামার্কেট এলাকায়। তবে
আরও পড়ুন: শীতের শুরুতেই খুশকির সমস্যা: ভেঙে নাও ভুল ধারণা ও জানো সঠিক কারণ
এইসব পিঠারমধ্যে-ভাপা, চিতই, পুলি, পাটিসাপটা এবং দুধচিতইয়ের মতো বিভিন্ন ধরনের গরম গরম পিঠা বিক্রি হচ্ছে, যা শীতের সন্ধ্যায় মানুষের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এই ভ্রাম্যমাণ দোকানগুলো শহর ও গ্রামের বিভিন্ন মোড় থেকে শুরু করে হাট-বাজার পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে ধোঁয়া ওঠা পিঠা খেতে খেতে জমে ওঠে পিঠাপ্রেমীদের আড্ডা। প্রতিদিন সন্ধ্যার পর এসব দোকানে ভিড় করছেন ক্রেতারা। কেউ অফিস শেষে, কেউ বন্ধুবান্ধব নিয়ে আবার কেউ পরিবারের সঙ্গে এসে পিঠার স্বাদ নিচ্ছেন।
পিঠা বিক্রির আয়ে চলে সংসার: শীতকালে প্রতিদিন বিকেল থেকে সন্ধ্যা নামতেই কৃত্রিম আলো জ্বালানো হলে পিঠা তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। পিঠা বিক্রির ভ্যানের কাছেই ক্রেতারা অপেক্ষা করেন। রাজধানীর টিএসসি এলাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশের গেটেই পিঠা বিক্রি করেন চার থেকে পাঁচজন। মূলত নগরের ব্যস্ত জীবনে ঘরে পিঠা তৈরি করা কষ্টসাধ্য হলেও ভ্রাম্যমাণ দোকানে পিঠা পাওয়া যায়। তাই শীত মৌসুমে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় পিঠার দোকান গড়ে ওঠে। এ বছর শীতকে ঘিরে আগে-ভাগেই রাজধানীর মৌসুমি পিঠা বিক্রেতাদের প্রস্তুতির কমতি নেই। দিনভর পিঠার আটাসহ অন্য উপকরণ তারা তৈরি করেন। আর বিকেল হলেই রাস্তার গুরুত্বপূর্ণ স্থানে হরেক রকমের পিঠা তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। রাত ১০টা পর্যন্ত সেই পিঠা বিক্রি চলে। আর পিঠা বিক্রির আয়েই এসব খেটে খাওয়া মানুষের সংসার চলে। বলা যায়, শীত মৌসুমে তিন মাস পিঠা বিক্রি করেই তারা উপার্জন করে থাকেন। তবে প্রতিদিন বিকেল থেকেই পিঠা বিক্রেতারা রাস্তার গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অবস্থান করেন। কেউ ভ্যানে করে আবার কেউ নির্দিষ্ট স্থানেই শীত মৌসুমে পিঠা বিক্রি করেন। পিঠা বিক্রির টাকায় এ স্বল্প আয়ের মানুষগুলোর সংসার চলে। শীত শেষ হলে রিকশা চালানো কিংবা অন্য কোনো দিন মজুরির কাজে যুক্ত হয়ে পড়েন তারা। এ দলে নারীরাও রয়েছেন। এসব নারীরা সারাবছর বাসাবাড়িতে কাজ করেন। অনেকেই কাজ না পেয়ে স্বামী সন্তান সঙ্গে নিয়ে রাস্তায় পিঠা বিক্রি করছেন। এসব নারীদের কারোর স্বামী নেই আবার স্বামী থাকলেও অসুস্থ। তাই সংসার চালাতে শীত মৌসুমে পিঠা বিক্রি করছেন। এসব দোকানে শীতের বিভিন্ন প্রকারের পিঠা দেখা যায়। এর মধ্যে ভাপা আর চিতই পিঠার দোকানই বেশি চোখে পড়ে। তবে সন্ধ্যা নামতেই নগরের পিঠার দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় বাড়তে থাকে। অনেক সময় একজনের পক্ষে পিঠা তৈরি করে বিক্রি করতে হিমশিম খেতে হয়। একাধিক চুলায় পিঠা তৈরি করেও ক্রেতাদের চাহিদা পূরণ কঠিন হয়ে যায়। এ সময় পিঠা বিক্রেতা কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে অনুরোধও করেন। অনেকে বাড়ির সদস্যদের জন্যও পিঠা নিয়ে যান। আর বেশিরভাগ ক্রেতাই গরম পিঠা খাওয়ার জন্য দাবি করেন বলে তাদেরকে অপেক্ষা করতে হয়। এসব পিঠার দোকানে রিকশাচালক থেকে শুরু করে দিনমজুর, শিশু-কিশোর, চাকরিজীবী, শিক্ষার্থী সব শ্রেণি-পেশার মানুষই আসেন। পিঠা বিক্রেতারা জানান, চালসহ অন্যান্য দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি হলেও পিঠার দাম বাড়েনি।
আরও পড়ুন: শীত আসছে, এখনই শুরু করুন নিজের যত্ন!
টিএসসির পিঠা বিক্রেতা সবুজ বলেন, আমার এখানে দুই ধরনের ভাপা পিঠা তৈরি করা হয়। ঝালের ভাপা আর গুড়ের ভাপা পিঠা। বিকেল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত একশ থেকে ১৫০টি পিঠা বিক্রি করা যায়। প্রতিদিন একইরকম বিক্রি হয় না। কোনোদিন একশটি পিঠাও বিক্রি করা কঠিনে হয়ে যায়। এখন তো সবখানেই পিঠা পাওয়া যায়। পিঠার দামের বিষয়ে তিনি বললেন, সাধারণত ১০টাকা দামেই পিঠা বিক্রি করি। কেউ কেউ ২০ টাকার পিঠার কথা বললে সেটাও তৈরি করি। তবে ১০টাকার পিঠাই বেশি বিক্রি করি। দিনে এক থেকে দেড় হাজার টাকার পিঠা বিক্রি হলে পাঁচ থেকে সাতশ টাকা লাভ থাকে। কোনো কোনো দিন আবার পাঁচশ টাকাও হয় না। রামপুরার ওয়াপদা রোডের কাছে এক নারী পিঠা বিক্রেতার সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, শীতের সময় তিন মাস পিঠার চাহিদা থাকে। দুই মাস ধরে ভাপা ও চিতই পিঠা বিক্রি করছি। আর একমাস হয়তো পিঠা বিক্রি করা যাবে। চাল ও গুড়ের দাম বাড়লেও পিঠার দাম একই আছে বলেও জানান তিনি। তিনি বললেন, বাসাবাড়িতে কাজ করি। তবে সবসময় তো কাজ পাই না। তাই ছোট মেয়েকে নিয়ে রাস্তায় এই কাজ করে সংসার চলছে। শীত শেষ হলে হয়তো কিছু একটা করে চলবো, আল্লাহ যেভাবে রাখেন। কথা হয় কারওয়ান বাজার এলাকার পিঠা বিক্রেতা রহমান এর সঙ্গে। তিনি বলেন, আমরা খেটে খাওয়া মানুষ। যখনই কোনোকিছু করে আয় করার সুযোগ আসে তখনই তাই করতে হয়। শীতের সময় কমবেশি সবাই পিঠা খায়। তাই পিঠা বিক্রি করি। যা আয় হয় বউ, ছেলে-মেয়ে নিয়ে চলে যাচ্ছে। পরিবারের জন্য পিঠা কিনতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী আলী হোসেন বলেন, গ্রামে থাকলে মায়ের হাতের পিঠা খেতাম। কিন্তু এ ঢাকাতে সেই সুযোগ আর কোথায়। প্রায়ই সহকর্মীদের সঙ্গে শীতের সময়ে নগরীতে পিঠা খাওয়া হয়। আজ পরিবারের সদস্যদের জন্য পিঠা নিচ্ছি। তবে শঙ্কার বিষয় হলো- এখন ভেজাল গুড় তৈরি হচ্ছে, সেক্ষেত্রে ঝুঁকি তো থাকেই। তবে পিঠা খাওয়ার মজাই আলাদা বলতে পারেন। রাজধানীর ডেমরার বিভিন্ন এলাকায় প্রায় দুই শতাধিক পিঠার দোকান রয়েছে। আর এসব দোকানে শিতের পিঠার ভীষণ চাহিদা রয়েছে। এরমধ্যে ডেমরা, হাজীনগর, সারুলিয়া, স্টাফকোয়ার্টার, বড়ভাঙ্গা, কোদালধোয়া, ডগাইর, ছোটমুরগীর ফার্ম, কোনাপাড়া, বাঁশের পূল, আমুলিয়া, পাড়া ডগাইর। এসব এলাকার বিভিন্ন অলি-গলিতে শীতের পিঠার পসরা বসিয়ে দেদার বিক্রি করছে দেশের হারিয়ে যাওয়া বিভিন্ন মুখরোচক বাহারি নামের পিঠা-পুলি। এসব পিঠার মধ্যে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় হচ্ছে চিতই পিঠা, এর সাথে ধনিয়া পাতার ভর্তা, সরিষার ভর্তা, শুটকির ভর্তা এবং কসানো গরুর মাংস। এ ছাড়া বাহারি নামের যেমন, ফুল পিঠা, পাতা পিঠা, চিতই পিঠা, শামুক পিঠা, পাটি শাপটা পিঠা, মালপুয়া পিঠা, তেলের পিঠা, ভাপা পিঠা, লবঙ্গজ্বল পিঠা, মিষ্টি পুলি, ঝাল পূলি, সিদ্ধ পূলি ছাড়াও আরো বিভিন্ন ধরনের পিঠার দোকানে সাধারণ মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা যায়। ডেমরার সারুলিয়া এলাকার নোয়াখালী পিঠা ঘরের মালিক মোহাম্মদ নূর হোসেন নুরু বলেন, ডেমরা থানা এলাকায় আমাদের ৪টি পিঠার শো রুম রয়েছে। এছাড়া আমরা ঢাকা শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে বিভিন এলাকায় পিঠা উৎসবে ডিসপ্লে করে থাকি। সেখানে আমাদের বেশ কয়েকটি পিঠার স্টল থাকে। এবার পিঠার বেশ চাহিদা রয়েছে। একে তো শীতের পিঠার আয়োজন, তার ওপর নির্বাচন সবমিলিয়ে এবার ব্যাবসা ভালোই হচ্ছে। তবে রাজধানীর ডেমরায় একশত পার্সন স্বাস্থ্যসম্মত নকশী পিঠা-ঝিনুক পিঠা বিক্রি করেন নরসিংদির মেয়ে মাকসুদা আক্তার। তিনি জানান, তার পিঠা তৈরিতে কোন কৃত্রিমতা নেই। একেবারে প্রাচীন ট্রেডিশন মেনেই খেজুর কাঁটার ডিজাইনে তৈরি করা হয় এই পিঠা। এতে ভালো তেল এবং গুড়ের সংমিশ্রণ থাকায় পিঠাটা খুবই সুস্বাদু হয়। তবে কোনো গন্ধ থাকে না। এছাড়াও নকশি পিঠার ডেলিভারি দিয়ে আলোচনায় ওঠে এসেছেন তিনি। নরসিংদির ঐতিহ্যবাহি নকশি পিঠা ও ঝিনুক পিঠা বিক্রি করে ইতিমধ্যে ক্রেতাদের নজর কেড়েছেন। রামপুরার ওয়াপদা রোডের জাহাজ বিল্ডিংয়ের মোড়ে সারা বছরই চিতই পিঠা বিক্রি করেন নাজমা বেগম। তিনি জানান, শুধু শীতকালই নয়, সারা বছরই প্রতিদিন দুপুরের পর পিঠা বিক্রি করেন তিনি। আশপাশের গলির মানুষজন লাইন দিয়ে তার পিঠা কেনেন। অনেকে ৮ থেকে ১০টা করে বাসায় নিয়ে যান, পরিবারের সবাই একসঙ্গে বসে খান। প্রতিটি চিতই পিঠা ১০ টাকা করে বিক্রি করেন নাজমা। তিনি জানান, পিঠা তৈরির জন্য চালের গুঁড়াসহ আনুষঙ্গিক সব জিনিস জোগাড়ে তার স্বামী সহায়তা করেন। পিঠা বিক্রি করেই তাদের সংসার চলে। ঢাবির কাঁটাবন কনকর্ড টাওয়ারের সামনের ফুটপাতে পিঠা খেতে এসেছেন মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন। তিনি বলেন, গ্রামের বাড়িতে আগে শীতের সময় ঘরে প্রায় প্রতিদিনই পিঠা বানানো হতো। সেই সময় আর নেই। এখন পিঠার স্বাদ পেতে হলে ফুটপাতই ভরসা। মগবাজার মোড়ে এক কোনায় ফুটপাতে তেলে পিঠা ভাজতে দেখা যায় রইছউদ্দিন নামে এক পিঠা বিক্রেতাকে। তিনি বলেন, এখানে তেলে পিঠার চাহিদা আছে। অনেকে দেখেই খেতে দাঁড়িয়ে যান। প্রতি পিস তেলে পিঠার দাম ১০ টাকা।
কিশোরগঞ্জে জমে উঠেছে ভাপা ও চিতই পিঠা বিক্রি: কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া, কটিয়াদী ও হোসেনপুরের গ্রামাঞ্চল ও পৌর এলাকায় জমে উঠেছে ভাপা ও চিতই পিঠা বিক্রি। পিঠা-পুলির দেশ আমাদের এই বাংলাদেশ। এদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন সময়ে নানান জাতের পিঠাপুলি তৈরী হয়। বিশেষ করে,শীত মৌসুমে গ্রামগঞ্জে পিঠা তৈরীর ধুম পড়ে যায়। পিঠা শুধু লোকজ খাবার নয়, এর সঙ্গে মিশে আছে আবহমান বাংলার সংস্কৃতি। আধুনিকতার ছোঁয়ায় পারিবারিক ও সমাজজীবন থেকে পিঠা তৈরির আয়োজন কমে যাচ্ছে। তবে এ ঐতিহ্য ধরে রেখেছে একশ্রেণির মৌসুমী নারী-পুরুষ ব্যবসায়ী। সকালের কুয়াশা কিংবা সন্ধ্যার হিমেল বাতাসে ভাপা পিঠা ও চিতল পিঠা শীতের আমেজকে বাড়িয়ে তুলে। উপজেলার হাসপাতাল মোড়,পোস্ট অফিস মোড়,খাদ্য গোদাম মোড়, নারায়নডহর বাজার,নতুন বাজার,সম্মুর দোকান সহ অলি-গলিতে রাস্তার ফুটপাতে ও মোড়ে মোড়ে চলছে বাহারী পিঠা বিক্রির ধুম। প্রতিটি দোকানেই ক্রেতার সংখ্যা বেশি। ধোঁয়া ওঠা গরম পিঠায় আড্ডা জমে উঠে পিঠার দোকানে। গ্রামাঞ্চলের মৌসুমি পিঠার দোকানগুলোর অধিকাংশই পরিচালিত হয় নারীদের মাধ্যমে। সংসারে পুরুষের পাশাপাশি উপার্জনে বাড়তি সহযোগিতার হাত বাড়ানোর জন্য দিন দিন বেড়েছে নারীদের এই পিঠার দোকান। এতে করে সংসারে কিছুটা বাড়তি উপার্জন হচ্ছে। পিঠা বিক্রেতারা জানান, বছরের এই সময়টা শীতকালীন পিঠার বেচা-বিক্রি বেশি হয়। তাইতো এই সময়ে দোকানিরা স্বাচ্ছন্দ্যে জীবন যাপন করতে পারেন। শীত যত বাড়বে তাদের পিঠা বিক্রিও ততো বাড়বে। শুধু কিশোরগঞ্জই নয়, নীলফামারীর সৈয়দপুরে শীতের আগমনের সঙ্গে সঙ্গে জমে উঠেছে মৌসুমি পিঠার দোকানগুলো। শহরের বিভিন্ন মোড় থেকে গ্রামের হাট-বাজার পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে এসব পিঠার দোকান, যেখানে ভাপা, চিতই, পুলি, পাটিসাপটা ও দুধচিতইসহ হরেক রকমের পিঠা তৈরি ও বিক্রি হচ্ছে। সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত ক্রেতাদের ভিড়ে সরগরম থাকে এসব দোকান। এছাড়াও ঠাকুরগাঁও,মুন্সীগঞ্জসহ দেশের প্রতিটি জেলা-উপজেলায় শীতকালে শুরু হয় পিঠছা বিক্রির ধূম। ঠাকুরগাঁও পৌর শহরের বাসিন্দা রুমা আক্তার বলেন, আগে শীত এলেই ঘরে পিঠা বানাতাম, এখন সময়ের অভাবে পারি না। তাই রাস্তার দোকান থেকেই গরম ভাপা পিঠা খেতে ভালো লাগে। আরেক ক্রেতা রফিকুল ইসলাম বলেন, হেমন্তের রাতে গরম গরম পিঠা খাওয়ার মজাই আলাদা। দামও হাতের নাগালে, তাই প্রায়ই এখানে আসি। স্কুলশিক্ষিকা সেলিমা বেগম বলেন, আমার বাচ্চারা ভাপা পিঠা খুব পছন্দ করে। প্রতিদিন স্কুল শেষে এখানে এসে কিছু পিঠা কিনে নিয়ে যাই।





