গাজীপুরে সাংবাদিকের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন

Sanchoy Biswas
গাজী মামুন
প্রকাশিত: ৯:৪২ অপরাহ্ন, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ৮:২১ অপরাহ্ন, ১৩ অক্টোবর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

গাজীপুরের মহানগরীর কোনাবাড়ী থানার ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে সংলগ্ন মোহাম্মদ আলী প্লাজায় আবাসিক হোটেল মুন ফ্রেশে অনৈতিক কাজের তথ্য নিতে যাওয়া সাংবাদিকের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫) সকাল ১১টায় গাজীপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে এই মানববন্ধন আয়োজন করে জার্নালিস্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন ও স্থানীয় সাংবাদিক সমাজ ও বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠন।

আরও পড়ুন: ১১টি জাতীয় দৈনিক পত্রিকার ডিক্লারেশন বাতিল

জার্নালিস্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি গাজী মামুন বলেন, সাংবাদিকরা সমাজের আয়না। এই আয়না যদি না থাকে, তাহলে দেশের সাধারণ মানুষ দেশের দুর্নীতির খবর জানতে পারবে না। আয়না ছাড়া দেশ চলতে পারবে না। তাই সাংবাদিকদের পাশে থাকলে সন্ত্রাসীরা আর সাংবাদিকদের উপর হামলা করার সাহস পাবে না। সংবাদমাধ্যম দেশের চতুর্থ স্তম্ভ, সাংবাদিকরা লুকানো তথ্য বের করে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ করে বলেই সাধারণ মানুষ তা জানতে পারে। যদি তা না করে, দেশ তলিয়ে যাবে দুর্নীতিতে। তিনি বলেন, কিছু সুবিধাবাদী সাংবাদিকদের জন্য মূল পেশাদারিত্বের সাংবাদিকরা হেনস্তার শিকার হয়। এসব সুবিধাভোগী সাংবাদিকরাই হলুদ সাংবাদিক। তারা আঁতাত করে দুর্নীতিবাজদের দুর্নীতি করার সুযোগ করে দেয়। জুলফিকার আলী জুয়েল একজন সাংবাদিক, তিনি সত্য প্রকাশ করেন বলেই আজ তাকে হেনস্তার শিকার হতে হয়েছে। অবিলম্বে তাদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।

মানববন্ধনে জার্নালিস্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক ও দৈনিক ভোরের আলো পত্রিকার ব্যবস্থাপনা সম্পাদক ইব্রাহীম খলিল বলেন, সদস্য জুলফিকার আলী জুয়েল এর উপর হামলাকারীদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এছাড়া কোনাবাড়ীসহ গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় গড়ে উঠা অনৈতিক কার্যকলাপের আবাসিক হোটেলগুলো অনতিবিলম্ব বন্ধ করতে হবে। অন্যথায় সাংবাদিকরা বৃহত্তর আন্দোলনে যাবে। তিনি বলেন, হোটেল মুন ফ্রেশে মালিক, ম্যানেজার ও স্টাফরা এত সাহস পেল কোথা থেকে? কারা তাদের এই সাহস যোগায়, তাদের মুখোশ উন্মোচন করতে হবে। আসামীদের দ্রুত গ্রেফতার করা সহ হোটেল মুন ফ্রেশ দ্রুত বন্ধ করতে হবে, যেন ভবিষ্যতে ওই আবাসিক হোটেল মালিক স্বপন আর কোথাও কোনো দেহব্যবসার জন্য হোটেল চালু করতে না পারে।

আরও পড়ুন: লক্ষ্মীপুর প্রেসক্লাবে হেযবুত তওহীদের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

এসময় অন্যান্য বক্তারা বলেন, জার্নালিস্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য ও দৈনিক জন জাগরণ-এর কান্ট্রি এডিটর, চ্যানেল ২১-এর ব্যুরো প্রধান মোঃ জুলফিকার আলী জুয়েলকে কোনাবাড়ীতে "নিউ মুন ফ্রেশ আবাসিক হোটেল"-এর মালিক, ম্যানেজার ও স্টাফরা প্রকাশ্যে হেনস্থা ও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছে। তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন সাংবাদিকরা। তারা বলেন, কোনাবাড়ীতে আর কোন আবাসিক হোটেল চালু করতে দেওয়া হবে না।

মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা অভিযোগ করেন, সাংবাদিকরা দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে বারবার হামলা ও হেনস্তার শিকার হচ্ছেন। তারা অবিলম্বে ঘটনার সঙ্গে জড়িত হোটেল মুন ফ্রেশের মালিক, ম্যানেজার ও সংশ্লিষ্ট স্টাফদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান। একই সঙ্গে সাংবাদিক নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের জোর দাবি তোলেন।

মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন— জার্নালিস্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও এশিয়ান টেলিভিশনের স্টাফ রিপোর্টার গাজী মামুন, সাংগঠনিক সম্পাদক ও দৈনিক ভোরের আলো পত্রিকার ব্যবস্থাপনা সম্পাদক মোঃ ইব্রাহীম খলিল, মোঃ শিহাব উদ্দিন (প্রকাশক ও সম্পাদক, দৈনিক জন জাগরণ), জি.এস. জয় (নির্বাহী সম্পাদক, দৈনিক জন জাগরণ), এস এম রবিউল ইসলাম (কোনাবাড়ি থানা প্রেস ক্লাব), আবু সালেক ভূঁইয়া (ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি, দৈনিক জন জাগরণ), মোঃ জিল্লুর রহমান (হেড অফ মার্কেটিং, দৈনিক আমার প্রাণের বাংলাদেশ), দেলোয়ার হোসেন (রিপোর্টার, ৭১ টিভি), মোঃ সাগর (স্টাফ রিপোর্টার, দৈনিক ঘোষণা), মোঃ মাসুদ (রিপোর্টার, জন জাগরণ), সাবিনা ইয়াসমিন (স্টাফ রিপোর্টার, দৈনিক জন জাগরণ ও চ্যানেল ২১), রিয়া মনি (এশিয়ান টিভি), পিংকি (দৈনিক মাতৃ জগত), জুলফিকার আলী জুয়েল (কান্ট্রি এডিটর, দৈনিক জনজাগরণ ও ব্যুরো প্রধান, চ্যানেল ২১, এবং সদস্য, জার্নালিস্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন), জাহাঙ্গীর আলম পায়েল (দৈনিক প্রতিদিন খবর), তাইসেন আহমেদ রোহান (স্টাফ রিপোর্টার, দৈনিক ভোরের আলো), পিংকি আক্তার (স্টাফ রিপোর্টার, দৈনিক মাতৃ জগত), দৈনিক আলোকিত সকাল সাংবাদিক মাবুল আলম জুয়েলসহ আরও অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।

বক্তারা আরও বলেন, সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনায় বিচার না হলে সাংবাদিক সমাজ বৃহত্তর আন্দোলনে যাবে। তারা প্রশাসনের কাছে অনতিবিলম্বে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার ও আইনের আওতায় আনার আহ্বান জানান। মানববন্ধনে বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার গণমাধ্যমকর্মী উপস্থিত ছিলেন।