দুদকে তদন্তের আবেদন

মানিকগঞ্জ গণপূর্তের অফিস সহকারীর অবৈধ সম্পদের পাহাড়

AK Azad
বাংলাবাজার রিপোর্ট
প্রকাশিত: ৫:৫৮ অপরাহ্ন, ২৬ নভেম্বর ২০২৪ | আপডেট: ১১:৫২ অপরাহ্ন, ২০ অগাস্ট ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

মানিকগঞ্জ জেলার গণপূর্ত বিভাগে সিন্ডিকেট গড়ে তুলে ঠিকাদারি ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ, অবৈধ সম্পদ অর্জনসহ নানা অভিযোগ উঠেছে  অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর মো. আতিকুর রহমানের বিরুদ্ধে।

তৃতীয় শ্রেণির এ কর্মচারী তার অফিসের ডকুমেন্ট চুরি, টেন্ডারবাজি, জালিয়াতি, টেন্ডার ড্রপ করে তার পক্ষে থাকা সিন্ডিকেটের ঠিকাদারদের কাজ পাইয়ে দেয়া, সাধারণ শাখা থেকে প্রাক্কলনের অফিস কপি লিক করে প্রাক্কলনের রেট ঠিকাদারদের জানিয়ে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। এমনকি সরকারি জায়গা দখল করে নির্মাণ করেছেন দোকানও। যার ফলে গত ২০ বছরে তিনি কোটি কোটি টাকার মালিক বনেছেন। তার অবৈধ উপার্জিত সম্পদের বিবরণে অনেকে বিস্মিত। মাত্র কয়েক বছরের মধ্যে কিভাবে এত সম্পদ অর্জিত হলো।

২০০৪ সালে মানিকগঞ্জ গণপূর্ত বিভাগে যোগ দেয়ার পর থেকে একই স্থানে কাজ করছেন মো. আতিকুর রহমান। দিন গড়ানোর সাথেই তিনি হয়েছেন বেপরোয়া। তার দাপটে অনেক ঠিকাদার যেমন অসহায়; তেমনি অফিসের প্রকৌশলী থেকে পিয়নও তার কর্মকাণ্ডে বিরক্ত।
নাম প্রকাশ না করার স্বার্থে মানিকগঞ্জ গণপূর্ত বিভাগের একাধিক জন অভিযোগ করেন, আতিকুর রহমানকে ম্যানেজ করা ছাড়া মানিকগঞ্জ গণপূর্ত বিভাগে অফিস স্টাফ ও কর্মকর্তাদের বেতন বিল পর্যন্ত প্রেরণ করা হয় না।

তার অবৈধ সম্পদের মধ্যে রয়েছে, নিজ জেলা টাঙ্গাইলের শহরে ৫০ লক্ষ টাকা দিয়ে ১৫০০ বর্গফুটের একটি প্ল্যাট ক্রয়, টাঙ্গাইলে তার নিজের নাম ও বউয়ের নামে ২৫ কাঠা জমি, বিভিন্ন ব্যাংকে তার ও তার বউয়ের নামে কোটি টাকার এফডিআর, বউ ও আত্মীয় স্বজনের নামে শেয়ার মার্কেটে বিনিয়োগ রয়েছে কোটি টাকা। এছাড়া, আতিকের স্ত্রীর কাচে বিপুল পরিমাণ স্বর্ণ রক্ষিত রয়েছে।

পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই আতিকুর রহমানের ভাগ্য খুলে যায়। আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে আতাত করে তাদেরকে ঠিকাদারী কাজ পাইয়ে দিতো। তার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ, সাবেক কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাকের আশীর্বাদপুষ্ঠ বিথী কনস্ট্রাকশনের মাধ্যমে আতিকুর রহমান মানিকগঞ্জে ঠিকাদারী কাজ পরিচালনা করেন।

শেখ হাসিনা সরকারের আমলে প্রতি টেন্ডার বাবদ তাকে অন্তত ৫ শতাংশ হারে টাকা দিতে হতো। এ নিয়ে স্থানীয় অনেক ঠিকাদারের সাথে আতিকরে একাধিকবার বাকবিতাণ্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। আতিককে দিয়ে টেন্ডার না করালে সে ঠিকাদারদের লটারি থেকে বাদ দিয়ে তার পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ পাইয়ে দেয়।

কয়েকদিন আগে তার বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী কয়েকজন ঠিকাদার যথাক্রমে মশিউর রহমান, আব্দুর রাজ্জাক, আলাউদ্দিন, মোস্তফা নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে অভিযোগ দিয়েছেন। এর আগেও তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হলেও ভয়ে কেউ ব্যবস্থা নিতে পারেনি।
অভিযোগ আছে, মানিকগঞ্জ গর্ণপূর্ত বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী রাজু মল্লিকের ছত্রছায়ায় আতিকুর রহমান বেশি বেপরোয়া হয়েছেন।