কুড়িগ্রামে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

Sanchoy Biswas
এম.এ. কিবরিয়া, কুড়িগ্রাম থেকে ফিরে
প্রকাশিত: ১০:০০ অপরাহ্ন, ২০ মে ২০২৫ | আপডেট: ৮:৪১ অপরাহ্ন, ১৩ অক্টোবর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

বহিরাগত দুই যুবককে দিয়ে নিয়মিত অফিস করাচ্ছেন কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও)৷ তারা সরকারি কোন কর্মচারী না হয়েও প্রায় ২ মাস ধরে নিয়মিত কাজ করছেন অফিসে বসে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. সোহেল রহমান গত বছরের ডিসেম্বরে এ অফিসে যোগদান করেন৷ নিজ ক্ষমতাবলে ওই দুই ব্যক্তিকে চিলমারীতে নিয়ে আসেন। এরপর থেকেই তাদের দিয়েই অফিসের দাপ্তরিক কাজ এমনকি প্রকল্পের দেখাশুনাও করাচ্ছেন।

আরও পড়ুন: কমলনগরে বৃদ্ধার লালসার শিকার ৫ বছরের শিশু, এলাকাজুড়ে তোলপাড়

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকতার বিশেষ সহকারী হিসেবে পরিচিত ওই দুই ব্যক্তি হচ্ছেন কুষ্টিয়া জেলার শাওন ইসলাম ও বগুড়া জেলার শাকিল আহম্মেদ রকি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে অফিসের এক কর্মচারী বলেন, "বহিরাগত ওই দুই ব্যক্তির দাপটে অনেকটা কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন অফিসের অন্যান্য কর্মচারীরা। কেউ কোনো কিছু বলতে গেলেই তাকে অন্যত্র বদলির হুমকি দেন প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পি আইও) তাই ভয়ে কেউ কিছু বলার সাহস পায় না।"

আরও পড়ুন: গোপালগঞ্জে ‘ছেলের হাতে’ মা খুন

তবে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. সোহেল রহমান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, "কাজের গতি আনতেই ওই দুজনকে অন্যত্র থেকে এনে অফিসের কাজ করাচ্ছি। অফিস থেকে তাদের কোন বেতন দেয়া হয় না।"

এদিকে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের কাজে আসা অনেক সেবাপ্রার্থী বহিরাগত ওই দু’জনের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। অনেকে তুলেছেন অসাধাচরণের অভিযোগ।

অষ্টমীর চর ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, "সরকারি অফিসে বহিরাগতদের দিয়ে অফিস করানো ঠিক নয়। তাছাড়া এদের আচরণও ভালো নয়।"

থানাহাট ইউনিয়নের ছোট কুষ্টারি এলাকার আমির হোসেন বলেন, "প্রকল্পের কোন কাজে অফিস গেলেই তাদের কাছে আগে জবাবদিহি করতে হচ্ছে। কেন এসেছেন, কি জন্য এসেছেন, সাথে এতো লোকজন নিয়ে কেন এসেছেন, নানান প্রশ্নের উত্তর দিতে হচ্ছে। আগের পিআইওদের সময়ে এভাবে জবাবদিহি করতে হয়নি।"

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসে গেলে দেখা যায়, ওই দুই ব্যক্তির মধ্যে শাওন ইসলাম উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. আতিকুজ্জামানের টেবিলে চেয়ার পেতে দাপ্তরিক কাজ করছেন। শাকিল আহম্মেদ রকি দাপ্তরিক কাজ করছেন কার্যসহকারী নিজামুল ইসলামের টেবিলের চেয়ারে বসে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শাওন ইসলাম কোন কথা না বলতে রাজি হয়নি। তবে এ প্রতিবেদক'কে শাকিল আহম্মেদ বলেন, "আমাকে পিআইও স্যার নিয়ে এসেছেন। কোন নিয়োগ বা অনুমতিপত্র আমার কাছে নেই।"

গোপন সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. সোহেল রহমান সিলেটের ওসমানীনগরে কর্মকালীন সময়ে ওই দুজন সেখানেও বিশেষ সহকারী হিসেবে অফিসের দাপ্তরিক কাজ ও প্রকল্পের দেখাশুনা করেছেন৷

এ বিষয়ে চিলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সবুজ কুমার বসাক 'বাংলাবাজার পত্রিকাকে বলেন, "সরকারী কর্মচারী নীতিমালা অনুযায়ী ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া বহিরাগতদের দিয়ে কাজ করে নেয়ার সুযোগ নেই। কেউ ত্রাণ শাখায় কাজ করে কিনা এমনটি আমার জানা নেই। তবে খোঁজ নিয়ে অভিযোগের সত্যতার প্রমাণ পেলে এ বিষয়ে আইনানুগ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।"