সুনামগঞ্জ সীমান্তে হাত বাড়ালেই মিলছে ইয়াবা, বিপথগামী হচ্ছে তরুণ-তরুণী ও যুবকেরা

সুনামগঞ্জের সীমান্ত এলাকা সদর উপজেলার জাহাঙ্গীর ইউনিয়নের মঙ্গলকাটা বর্ডার হাট বাজার, দোয়ারাবাজারের রিংকু বর্ডার হাট বাজার, তাহিরপুরের বাদাঘাট ইউনিয়নের লাউড়েরগড় শহীদাবাদ বর্ডার হাট বাজার, বারেকের টিলায় হাত বাড়ালেই মিলছে মরণনেশা ইয়াবা। ফলে বিপথগামী হচ্ছে তরুণ-তরুণী ও যুবকেরা। সদর উপজেলার মোল্লাপাড়া ইউনিয়নের বুড়িস্থল পয়েন্ট, সাদকপুর, আক্কলের পয়েন্ট, বেতগঞ্জ বাজার, মান্নারগাঁও ইউনিয়নের রামপুর, নুরপুর চামার বাড়ি, আদার বাজার, কাঠাকালি বাজার, আজমপুর খেয়াঘাট, লক্ষ্মণশ্রী ইউনিয়নের নীলপুর বাজার, দিরাই রাস্তা মোড়, রাবার বাড়ি চামারবাড়ি, গৌরারং ইউনিয়নের নিয়ামতপুর চামারবাড়ি, টুকের বাজার চামারবাড়ি, সুরমা ইউনিয়নের মইনপুর, জগন্নাথপুর, হালুয়ার ঘাট, ইব্রাহিমপুর ইউনিয়ন অফিসের পেছনে, কুরবান নগর ইউনিয়নের ডিসি ভ্যালি পার্ক, নবীনগর, মাইজবাড়ি, ডাউকাকালী, পৌর শহরের শ্মশানঘাট, মোহাম্মদপুর, উকিল পাড়া, বড়পাড়া, তেঘরিয়া, লম্বাহাটি, আরপিননগর, সোমপাড়া, চাঁদনী ঘাট, বিভিন্ন পাড়া-মহল্লা, হাট-বাজার, অলি-গলি, স্কুল-কলেজ ও সদর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অবাধে বিক্রি হচ্ছে এ মরণনেশা।
সরেজমিনে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, মরহুম সুলতান মিয়ার ছেলে ইয়াবা সম্রাট রবিন মিয়া, তার ভাই রাফিক মিয়া ও রিংকু মিয়া, পংকজ মিয়া, গ্রামের সোহেল মিয়ার ছেলে হৃদয় মিয়া, সজিব মিয়াসহ আরও অনেকেই শহরতলীর বাজারে ইয়াবা, ভারতীয়, চামারি মদ বিক্রি করছে। ইয়াবা ক্রয় করে থাকে এলাকার উঠতি বয়সের তরুণ-তরুণী ও যুবকেরা। রাফিক মিয়া প্রকাশ্যে বিক্রি করছে ইয়াবা ও চামারি মদ। এদিকে আমবাড়ি বাজারের বিভিন্ন গলিতে বিভিন্ন দোকানের পেছনে বসে ইয়াবা সেবন করে থাকে। বাজারে শিলং তীরের নামে জুয়া খেলা চলে অবাধে। শিলং তীরের এজেন্ট হলেন, সোহেল মিয়ার ছেলে হৃদয় মিয়া।
আরও পড়ুন: গোবিন্দগঞ্জে ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতার বিরোধে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা-ভাঙচুর
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যবসায়ী জানান, বাজারের পরিস্থিতি খুব ভালো নয়। একদিকে ছোট ছোট ট্যাবলেট যাকে ইয়াবা বলা হয় সেসব বিক্রি হয়, মদও বিক্রি হয়, এছাড়া জুয়া খেলাও চলে বাজারে। আমরা প্রতিবাদ করলে অত্যাচার করবে, যার কারণে প্রতিবাদ করতে পারি না। পুলিশ যদি তৎপর হয় তাহলে এসব অবৈধ কর্মকাণ্ড থামানো সম্ভব। রবিন মিয়ার ভাই রাফিক মিয়া মোটরসাইকেল চালক। সে মোটরসাইকেলে প্যাসেঞ্জার উঠিয়ে নিরাপদ স্থানে নিয়ে ধারালো ছুরি দেখিয়ে টাকা-পয়সা, সোনা-দানা ছিনতাই করে থাকে। তার আরেক সহপাঠী সিএনজি চালক তানহা, সে সিএনজিতে তার সঙ্গে ৪ জন যাত্রী গাড়িতে রাখে। দেখে শুনে একজন প্যাসেঞ্জার উঠিয়ে গন্তব্যে পৌঁছার পর তাকে ধরে চাপাতি দেখিয়ে সব কিছু নিয়ে প্রতারক চক্রের প্রধান রবিন মিয়ার কাছে জমা দেয়। সেই টাকা রবিন মিয়া রাজনৈতিক কয়েকজন নেতাকর্মীকে নিয়ে ভাগ-বাটোয়ারা করে খাচ্ছেন। সচেতন মহলের কেউ প্রতিবাদ করলেই তার স্ত্রীকে দিয়ে হয়রানি ও ব্ল্যাকমেইল করে রবিন। অপরদিকে শহরের হাছননগরস্থ উত্তম লাল কলোনীতে চামারি মদের রমরমা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন।
সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আবুল কালাম জানান, মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স। অভিযোগ পেলেই তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: নাসিরনগরে বিএনপির উদ্যোগে দলের জাঁকজমকপূর্ণ প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন
সুনামগঞ্জ জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবুল হাসেম জানান, গোপন তথ্য নিয়ে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে আমরা অভিযান পরিচালনা করে মালামালসহ ইয়াবা ব্যবসায়ীকে আটক করে আদালতে সোপর্দ করেছি। মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে।