সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি শামসুদ্দোহা খন্দকারকে নারীসহ পার্কে আটক করেছে পুলিশ

Sadek Ali
বাংলাবাজার ডেস্ক
প্রকাশিত: ১:৫৬ অপরাহ্ন, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ১:৫৯ অপরাহ্ন, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি ও বিআইডব্লিউটিএর আলোচিত সাবেক চেয়ারম্যান ড. শামসুদ্দোহা খন্দকারকে বিদেশি মদ ও নারীসহ ওয়ান্ডারেলা গ্রীন পার্ক থেকে আটক করেছে পুলিশ। ঢাকা নবাবগঞ্জ এলাকার এই পার্কটির মালিক শামসুদ্দোহা খন্দকার নিজেই।

স্থানীয় সূত্র জানায়, ড. শামসুদ্দোহা খন্দকার তার বাড়ি এবং পার্শ্ববর্তী জায়গা জমিতে এই পার্কটি গড়ে তোলে। ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে এখানে অবস্থান নিয়ে অবৈধভাবে নারী ও মাদকদ্রব্যের অনৈতিক ব্যবসা বাণিজ্য শুরু করে। এলাকাবাসীর এই নিয়ে দীর্ঘদিনের অভিযোগ ছিল।

আরও পড়ুন: চায়ের দোকানি দিয়ে চলছে হাসপাতালের ইমার্জেন্সি বিভাগ

শনিবার রাতে দুই নারী তাদের প্রাপ্য পরিশোধ নিয়ে পার্কের ভিতর বাকবিতণ্ডায় জড়ালে পরে একজন ৯৯৯ ফোন করে পুলিশ ডাকে। পরবর্তীতে পুলিশের সাথে এলাকাবাসীও যোগ দেয়। এ সময় পুলিশ ও জনতা ড. শামসুদ্দোহা কে আটক করে। ওই সময় চার মহিলাকেও আটক হয়। পুলিশ তাদের আটক করে নবাবগঞ্জ থানায় নিয়ে যায়।

স্থানীয় জনগণ শামসুদ্দোহার কক্ষ থেকে বিদেশী মদ উদ্ধারের কথা জানায়।  

আরও পড়ুন: মাজারে হামলার ঘটনায় আতঙ্ক কাটেনি, ‘মব সন্ত্রাস’ নিয়ে আবারো প্রশ্নে সরকার

নবাবগঞ্জ থানার ওসি মমিনুল ইসলাম জানান, ড. শামসুদ্দোহা খন্ধকারের বিরুদ্ধে চেক জালিয়াতির মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে। তাকে আটক করা হয়েছে। অপরদিকে কোন মাদকদ্রব্য উদ্ধার হয়নি। চার মহিলা  ও পার্কের কর্মচারী কে আটক করা হয়েছে। তারা আপাতত পুলিশ হেফাজতে আছে। তাদের বেতন পরিশোধ করা হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে।

উল্লেখ্য, পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি শামসুদ্দোহা এবং তার স্ত্রী ফেরদৌসী সুলতানার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এতে ৬৬ কোটি ৪৮ লাখ ৬৯ হাজার ৯৮১ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। দুদক সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে। মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেনের আদালতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক খোরশেদ আলম গত বছরের জুলাই মাসে এ চার্জশিট জমা দেন। 

দুদকের সূত্রমতে, সাবেক এই পুলিশ কর্মকর্তা বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান ছিলেন। চাকরি করার সময় তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করে দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল অর্থ আয় করেন। এসব অর্থ বিভিন্ন তফশিলি ব্যাংকের হিসাবে সন্দেহজনক উৎসের অসামঞ্জস্যপূর্ণ ও অস্বাভাবিক লেনদেন করেন। এই প্রক্রিয়ায় তিনি ২১ কোটি ৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা ব্যাংক হিসাবে জমার পর বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় তুলে তার অবস্থান প্রকৃতি, উৎস, মালিকানা আড়াল করার চেষ্টা করেছেন।

আরও জানা গেছে, দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে তিনি ৮ কোটি ৪৪ লাখ ১০ হাজার ২২১ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপনসহ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য দিয়েছেন। এছাড়া দুদকের অনুসন্ধানে ২ কোটি ৮৭ লাখ ৩ হাজার ৭৮ টাকার অবৈধ সম্পদের প্রমাণ পাওয়া গেছে। যে কারণে তার বিরুদ্ধে দুদক আইন ২০০৪ এর ২৬(২) ২৭(১) এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি দমন প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। এ ছাড়া তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে ২৮ কোটি ৪৭ লাখ ৩ হাজার ৮৯১ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করা এবং ২৭ কোটি ৪৮ লাখ ৮২ হাজার ৪৯১ টাকার জ্ঞাতআয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।