তিন যুগ পর চাকসু নির্বাচন আজ
উৎসবমুখর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, ক্যাম্পাসে কঠোর নিরাপত্তা

৩৬ বছর পর অবশেষে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) ও হল ও হোস্টেল সংসদ নির্বাচন। বুধবার (১৫ অক্টোবর) সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলবে ভোটগ্রহণ। দীর্ঘ তিন যুগ পর আয়োজিত এ ভোটযুদ্ধ ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসজুড়ে এখন উৎসবের আমেজ।
অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশন নিয়েছে সর্বোচ্চ নিরাপত্তাব্যবস্থা।
আরও পড়ুন: সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে আহত বিজিবি সদস্যকে হেলিকপ্টারযোগে ঢাকায় স্থানান্তর
চাকসুর ২৬টি পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৪১৫ প্রার্থী।
অন্যদিকে, হল ও হোস্টেল সংসদের ২৪ পদে লড়ছেন ৪৯৩ জন প্রার্থী।
আরও পড়ুন: তিন যুগ পর চাকসু নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু
মোট ২৭ হাজার ৫১৬ জন শিক্ষার্থী আজ ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।
নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচটি অনুষদ ভবনে রয়েছে ১৫টি ভোটকেন্দ্র ও ৬১টি ভোটকক্ষ। প্রতিটি ভোটকক্ষে সর্বোচ্চ ৫০০ ভোটার ভোট দিতে পারবেন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মনির উদ্দিন বলেন, চাকসু নির্বাচন ওএমআর ব্যালট পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রতিটি ব্যালটে থাকবে ২৪ অঙ্কের নিরাপত্তা কোড এবং একটি গোপন কোড, যা মেশিনে শনাক্ত হবে।
অংশগ্রহণকারী প্যানেলসমূহ
মোট ১৩টি প্যানেল*অংশ নিচ্ছে এবারের নির্বাচনে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য—
ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল, ছাত্রশিবির সমর্থিত সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট, স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী সম্মিলন, বাম সংগঠনগুলোর প্যানেল ‘দ্রোহ পর্ষদ’ ও ‘বৈচিত্র্য ঐক্য’ ,বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন সমর্থিত সচেতন শিক্ষার্থী সংসদ, সুফিপন্থি শিক্ষার্থীদের প্যানেল ‘অহিংস শিক্ষার্থী ঐক্য’
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে ক্যাম্পাস ও আশপাশে গড়ে তোলা হয়েছে বিশেষ নিরাপত্তা বলয়।
মাঠে থাকছে— বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখা, পুলিশ, র্যাব, ফায়ার সার্ভিস,
রিজার্ভ ফোর্স, স্ট্রাইকিং ফোর্স, গোয়েন্দা সংস্থা, বিএনসিসি ও রোভার স্কাউট।
দায়িত্বে থাকবেন পাঁচ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। এছাড়া এক হাজার ৫০ পুলিশ সদস্য ও ৪০ র্যাব সাইকেল ইউনিটের সদস্য সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করবেন। প্রয়োজনে বিজিবি ও সেনাবাহিনীও সহায়তা করবে।
প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে প্রবেশের আগে ভোটারদের তিন ধাপে তল্লাশি করা হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী বলেন, শিক্ষার্থীরা যেন নিরাপদে ও নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারেন, এজন্য সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে শুধুমাত্র বৈধ ভোটার ও অনুমোদিত ব্যক্তিরাই প্রবেশ করতে পারবেন।
তিনি জানান, সাংবাদিকদের জন্য থাকবে অবাধ প্রবেশাধিকার, শুধু গোপন ব্যালট কক্ষ ছাড়া।
ভোটারদের প্রবেশের জন্য খোলা থাকবে তিনটি গেট- কাটা পাহাড়, ৩ নম্বর ডাউন,
শহীদ মিনারের দক্ষিণের আর্চওয়ে।
বৈধ আইডি কার্ড বা ব্যাংক পে-স্লিপ দেখিয়ে প্রবেশ করতে হবে।
প্রতিটি ভোটারে দেওয়া হবে পাঁচটি ব্যালট পেপার।নির্ধারিত পেন দিয়ে পছন্দের প্রার্থীর নামের পাশে থাকা বৃত্ত পূরণ করতে হবে।
সীমার বেশি ভোট দিলে শুধু ওই পদের ভোট বাতিল হবে।
অনিয়মের অভিযোগ জানাতে যোগাযোগ করতে হবে ০১৮১৯৩৮৭১২২ নম্বরে।
ভোটের দিন শিক্ষার্থীদের জন্য চলবে ১১ দফা শাটল ট্রেন এবং ৩০টি বাস।
প্রথম ট্রেন ছাড়বে চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে সকাল ৭টা ৩০ মিনিটে এবং শেষ ট্রেন রাত ১০টা ১০ মিনিটে।
বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রথম ট্রেন ছাড়বে সকাল ৮টা ৪০ মিনিটে, শেষ ট্রেন রাত ১০টা ৪৫ মিনিটে। এছাড়া সকাল থেকে নিউ মার্কেট ও ষোলশহর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গামী বাস চলাচল করবে সারাদিন।