খেয়াঘাটের ভাড়া নিয়ে টেঁটাযুদ্ধের পর প্রশাসনের টনক নড়েছে
নরসিংদী সদর উপজেলার মেঘনা নদীতে খেয়া পারাপারের অতিরিক্ত ভাড়া আদায়কে কেন্দ্র করে দু'পক্ষের টেঁটাযুদ্ধে উভয় পক্ষের ৮ জন আহত হয়। ৪ নভেম্বর (মঙ্গলবার) বেলা ১১টার দিকে সদর উপজেলার মাধবদী থানাধীন দূর্গম চরাঞ্চল চরদিঘলদী ইউনিয়নের জিতরামপুর গ্রামে চাঁন মিয়া গ্রুপ ও শহিদ মেম্বার গ্রুপের মাঝে এ ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের পর জাতীয় পত্র-পত্রিকায় ও টিভি চ্যানেলে সংবাদ প্রকাশিত হলে প্রশাসনের টনক নড়ে। পরে জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আব্দুল ওহাব রাশেদ তাত্ক্ষণিক খেয়াঘাটের ইজারা বাতিল করেন।
বুধবার (৫ নভেম্বর) সকালে জেলা পরিষদের সহকারী প্রকৌশলী নূর-ই-ইলহাম খেয়াঘাটের ইজারা বাতিলের বিষয়ে সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, রসুলপুর-জিতরামপুর-শান্তিপুর খেয়াঘাটের ইজারাদার শফিকুল ইসলামকে (সেন্টু) ইজারা বাতিলের বিষয়ে অবগত করে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন
আরও পড়ুন: কক্সবাজারে সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের ৫ জন নিহত, আহত ২
জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আব্দুল ওহাব রাশেদ স্বাক্ষরিত চিঠিতে উল্লেখ করেন ইজারাদার শফিকুল ইসলাম (সেন্টু) চলতি বছরের ১ জুলাই থেকে ৩০ জুন/২৬ পর্যন্ত খেয়াঘাটের ইজারা নেন। ইজারার শর্ত অনুযায়ী খেয়া পারাপারে জন প্রতি ৪ টাকা নির্ধারণ করা হলেও তিনি জনপ্রতি ২০ টাকা আদায় করেন এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে জেলা পরিষদের তদন্তে তা সত্যতা পাওয়া যায়। যা শর্তের পরিপন্থি। নির্ধারিত মাশুলের চেয়ে অতিরিক্ত হারে মাশুল আদায় করার জন্য তার ইজারা বাতিল করা হয়।
উল্লেখ, গত কয়েক মাস ধরে খেয়া পারাপারে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা নিয়ে যাত্রীদের মাঝে তীব্র অসন্তোষ দেখা দেয়। এ নিয়ে স্থানীয় ওহাব মিয়া (৭০) নামে একযাত্রী প্রতিবাদ করায় ইজারাদারের সহযোগী চাঁন মিয়া ও তার ভাইয়েরা মিলে ওইব্যক্তিকে পিটিয়ে গুরুত্বর আহত করেন। তিনি ঢাকার একটি হাসপাতালে দীর্ঘ একমাস পর চিকিৎসা শেষে বাড়ী ফিরে আসেন। এনিয়ে মঙ্গলবার আবার চাঁন মিয়া ও তার সহযোগীরা ওহাব মিয়ার স্বজন অর্থাৎ শহিদ মেম্বারের লোকজনের ওপর হামলা চালায়। এতে উভয়পক্ষের আটজন টেঁটাবিদ্ধ হয়।
আরও পড়ুন: শরীয়তপুরে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা ও ওষুধ প্রদান
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্যক্তি বলেন, জেলা পরিষদ কর্তৃক খেয়া পারাপারের ইজারার নির্ধারিত ভাড়ার চেয়েও তারা গত কয়েক মাস ধরে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে। এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে জেলা পরিষদ, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিলেও কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। তিনি আরও বলেন, সংঘর্ষের পর প্রশাসনের টনক নড়েছে। যদি আরও আগে এ বিষয়ে প্রশাসন পদক্ষেপ নিতেন তাহলে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটতো না এবং লোকজনও ক্ষতিগ্রস্হ হতো না।
মাধবদী থানার ওসি মো. নজরুল ইসলাম বলেন, খেয়া পারাপারে অতিরিক্ত ভাড়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় একপক্ষ অর্থাৎ চাঁন মিয়ার পক্ষের লোকজন একটি অভিযোগ থানায় দিয়েছেন। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং এ ঘটনায় যারাই জড়িত তাদেরকে দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।





