২০৩০ সালের মধ্যে ৪৫% নারী থাকবেন অবিবাহিত ও নিঃসন্তান

আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বের অনেক দেশেই এক বিস্ময়কর সামাজিক পরিবর্তনের সাক্ষী হতে চলেছে। সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে পাল্টে যাচ্ছে নারীদের জীবনধারা, পরিবার ও সামাজিক কাঠামোর প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় জানা গেছে, ২০৩০ সালের মধ্যে প্রায় ৪৫ শতাংশ নারীই থাকবেন অবিবাহিত এবং নিঃসন্তান।
এক গবেষণায় জানা যায়, ২০৩০ সাল নাগাদ প্রতি ১০ জন নারীর মধ্যে অন্তত ৪-৫ জন থাকবেন অবিবাহিত এবং নিঃসন্তান। এই সংখ্যা পূর্ববর্তী প্রজন্মের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি। বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি কেবলমাত্র ব্যক্তিগত পছন্দ নয়; বরং এটি একটি সামাজিক-আর্থিক ও সাংস্কৃতিক রূপান্তরের প্রতিফলন।
আরও পড়ুন: বউ পেটানোর শীর্ষে বরিশাল
কেন বাড়ছে এই প্রবণতা?
ক্যারিয়ার ও শিক্ষা:
আরও পড়ুন: আজ বিশ্ব মা দিবস
নারীরা এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি শিক্ষিত এবং কর্মক্ষেত্রে সক্রিয়। অনেকেই পেশাগত সাফল্য অর্জনের আগে বিয়ে বা সন্তানকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন না।
ব্যক্তিগত স্বাধীনতা:
আধুনিক নারীরা এখন নিজের জীবনযাপন ও সিদ্ধান্তে অধিক স্বাধীনতা প্রত্যাশা করেন।
সচেতন পরিবার পরিকল্পনা:
অধিকাংশ নারীই এখন পরিবার গঠনের আগে মানসিক প্রস্তুতি, আর্থিক স্থিতি ও সম্পর্কের স্থায়িত্বকে গুরুত্ব দিচ্ছেন।
বিকল্প জীবনের পথ:
সমাজে 'সিঙ্গেল মাদার', 'চাইল্ডফ্রি লাইফস্টাইল', কিংবা 'পার্টনারশিপ ছাড়া জীবন'—এসব ধারণা আরও স্বীকৃত হচ্ছে।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটেও পরিবর্তন স্পষ্ট
বাংলাদেশের শহরাঞ্চলে এই পরিবর্তন আরও দ্রুত ঘটছে। বিভিন্ন কর্পোরেট হাউজ, বেসরকারি সংস্থা এবং উদ্যোক্তা ক্ষেত্রগুলোতে নারীদের দৃপ্ত উপস্থিতি সমাজে একটি নতুন মানসিকতা গড়ে তুলছে। যদিও নারীর স্বাধীন সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানানো হচ্ছে, তবুও এই প্রবণতার কিছু দীর্ঘমেয়াদী সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রভাব নিয়েও গবেষকরা সতর্ক করছেন।
জনসংখ্যার ভারসাম্যহীনতা:
বিয়ে ও সন্তান জন্মহার কমে গেলে ভবিষ্যতে কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর ঘাটতি দেখা দিতে পারে।
বয়স্ক জনসংখ্যার বেড়ে যাওয়া:
সন্তান না থাকায় বৃদ্ধ বয়সে দেখভালের সমস্যা বাড়তে পারে।
পারিবারিক কাঠামোর পরিবর্তন:
যৌথ পরিবার পদ্ধতির বিলুপ্তি এবং একক জীবনের মানসিক চাপও আলোচনায় আসছে।
২০২৫ থেকে ২০৩০—এই পাঁচ বছর হবে বৈপ্লবিক সামাজিক পরিবর্তনের সময়। নারীরা তাদের জীবনকে যেভাবে সংজ্ঞায়িত করছেন, তা শুধু ব্যক্তিজীবন নয়, পুরো সমাজ ব্যবস্থাকে নতুনভাবে গড়ে তুলছে। বিয়ে বা সন্তান নেওয়া এখন আর বাধ্যতামূলক জীবনের পর্যায় নয় এটি হয়ে উঠছে একজন নারীর নিজস্ব পছন্দের বিষয়।