হাসিনার ফোনালাপ নিয়ে বিশেষ তদন্ত কর্মকর্তার সাক্ষ্য

আমি পোড়াতে বলছি যা যা, ওরা পুড়িয়ে দিয়েছে সেতু ভবন

Sanchoy Biswas
বাংলাবাজার ডেস্ক
প্রকাশিত: ৭:৪৭ অপরাহ্ন, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ৯:৪৫ অপরাহ্ন, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের ফোনালাপের অডিও শোনা হয়েছে। অডিওতে শেখ হাসিনা বলেন, “আমি পোড়াতে বলেছি কী, ওরা পুড়িয়ে দিয়েছে সেতু ভবন। আমার নির্দেশনা দেওয়া আছে। ওপেন নির্দেশনা দিয়েছি। এখন লিথাল ওয়েপন (মারণাস্ত্র) ব্যবহার করবে। যেখানে পাবে সেখানে গুলি করবে।”

এই ফোনালাপ জুলাই-আগস্ট আন্দোলন দমনকালে সংঘটিত ঘটনাসমূহের প্রেক্ষিতে ছিল। একই দিন আন্দোলনকালে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ৫৩ নম্বর সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দেন বিশেষ তদন্ত কর্মকর্তা তানভীর হাসান জোহা।

আরও পড়ুন: সংসদ নির্বাচনে মাঠে থাকবে ১ লাখ সেনা: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

কথোপকথনের এক পর্যায়ে তাপস শেখ হাসিনাকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিতের কথা জানান। এর উত্তরে শেখ হাসিনা বলেন, “বিটিআরসি-বিটিভি পুড়িয়ে দিয়েছে। এখন ইন্টারনেট বন্ধ। মেশিনপত্র সব পুড়ে গেছে। আমি বলছি যা যা পোড়াতে… আমাদের সেতু ভবন পুড়িয়েছে।”

ফোনালাপের সময় তাপস বলেন, রাতের বেলায় আরও ব্যাপক আক্রমণ করা হবে, কারণ রাস্তায় বিভিন্ন জায়গায় কাজ চলছে। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী স্থানগুলো জানতে চাইলে তাপস বনানী ও গুলশানের নাম উল্লেখ করেন।

আরও পড়ুন: শেখ হাসিনার কয়েকটি দুর্নীতি মামলার রায় হতে পারে নভেম্বরেই: দুদক চেয়ারম্যান

পরে ট্রাইব্যুনালে প্রোকিউটর মিজানুল ইসলাম জানান, ফোনালাপে শেখ হাসিনা নিজেই আগুন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমি বললাম একটা জিনিস পোড়াতে, যা যা পোড়াতে। ওরা পুড়িয়ে দিয়েছে সেতু ভবন।” এর মানে তিনি আগুন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন, কিন্তু কাঙ্ক্ষিত স্থাপনাগুলো না পুড়িয়ে অন্য স্থাপনা পুড়িয়ে গেছে।

বিশেষ তদন্ত কর্মকর্তা তানভীর জোহা জবানবন্দিতে জানান, শেখ হাসিনার ৬৯টি অডিও ক্লিপ এবং তিনটি মোবাইল নম্বরের কল রেকর্ড জব্দ করা হয়েছে।

ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশনের পক্ষে ছিলেন প্রোকিউটর মিজানুল ইসলাম, গাজী এমএইচ তামিম, ফারুক আহাম্মদ, আবদুস সাত্তার পালোয়ানসহ অন্যান্যরা। এছাড়া সকালে রাজসাক্ষী হওয়া আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকেও ট্রাইব্যুনালে আনা হয়, যার উপস্থিতিতে সাক্ষীরা জবানবন্দি দেন।