গোবিন্দগঞ্জে স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যার অভিযোগ, গ্রেফতার ১

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে শিউলী বেগম (৩৫) নামের এক গৃহবধূকে নৃশংসভাবে গলা কেটে হত্যার পর বাড়ির পাশের কলাবাগানে লাশ ফেলে পালিয়ে যাবার অভিযোগ উঠে স্বামী ফরিদুল ইসলাম ফরিদ (৪৫) এর বিরুদ্ধে। মর্মান্তিক এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় রাতেই গোবিন্দগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়েরের পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত আসামীকে গ্রেফতার করেছে নিহতের সৎ ছেলেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানা হেফাজতে নিয়েছে। পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
গতকাল শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাত ৮টার দিকে উপজেলার কাটাবাড়ী ইউনিয়নের কাটাবাড়ী গ্রামের বাগদা বাজার টাওয়ার এলাকায় এ মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে রাতেই গোবিন্দগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ফরিদ বাড়ির পাশে কলাবাগান থেকে শিউলী বেগমের লাশ উদ্ধার করে।
আরও পড়ুন: নাজিরপুরে শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রস্তুতিমূলক সভা
নিহত শিউলী বেগম ওই গ্রামের মৃত মোহাম্মদ আলীর ছেলে ফরিদুল ইসলাম ফরিদের দ্বিতীয় স্ত্রী। তিনি একই ইউনিয়নের বোগদহ সদর কলোনী এলাকার শরীফ মিয়া ড্রাইভারের মেয়ে। তাদের সংসারে একটি ৮ বছরের ছেলে সন্তান রয়েছে। প্রায় ১২ বছর আগে শিউলী ও ফরিদের বিয়ে হয়। ফরিদের প্রথম স্ত্রী থেকেও দুটি সন্তান রয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, বিয়ের পর থেকেই নানা কারণে শিউলীকে নির্যাতন করতেন স্বামী ফরিদ। শনিবার সন্ধ্যায়ও স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া বাঁধে। এক পর্যায়ে স্বামী ফরিদ দ্বিতীয় স্ত্রী শিউলীকে মারধর করে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পরে মরদেহ বাড়ির পাশের কলাবাগানে ফেলে রেখে পালিয়ে যান তিনি। প্রতিবেশীরা বিষয়টি পুলিশকে জানালে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও বাড়ীর পাশের কলা বাগান থেকে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
আরও পড়ুন: পিরোজপুর জেলা বিএনপির নতুন কমিটিকে জামায়াতের শুভেচ্ছা
নিহত শিউলীর বাবা শরীফ মিয়া ড্রাইভার ও স্বজনদের অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই মেয়েকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতেন ফরিদ। পরিকল্পিতভাবেই শিউলীকে হত্যা করে মরদেহ ফেলে পালিয়েছে ঘাতক ফরিদ। তারা দ্রুত তাকে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
বিষয়টি নিশ্চিত করে গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বুলবুল ইসলাম জানান, ঘটনার পরপরই থানার পুলিশ খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করে এবং গাইবান্ধা জেলার সহকারী পুলিশ সুপার সি- সার্কএল রশিদুল বারীও রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
নিহতের লাশ আজ রবিবার সকালে ময়নাতদন্তের গাইবান্ধা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় নিহত শিউলীর ছোট ভাই সোহেল রানা বাদী হয়ে রাতেই গোবিন্দগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার সূত্র ধরেই আজ ভোর রাতে অভিযান চালিয়ে গোবিন্দগঞ্জ-দিনাজপুর আঞ্চলিক সড়কের ঘোড়াঘাট সীমানার নিকট থেকে মুল আসামী ফরিদুল ইসলাম ফরিদকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়েছে। এছাড়াও নিহতের সৎ ছেলে হৃদয়কেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
এই পুলিশ কর্মকর্তা আরো বলেন, ফরিদের প্রথম স্ত্রী ও দুই সন্তান রয়েছে। শিউলী ছিলেন দ্বিতীয় স্ত্রী। দীর্ঘদিন ধরে তাদের মধ্যে দাম্পত্য কলহ চলছিল। নিহতের গলা ও পায়ে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, এসব আঘাতেই তার মৃত্যু হয়েছে।