বন্ধুর অনুপস্থিতিতে ‘কবুল’ বললেন না বর

নোয়াখালীর হাতিয়ায় বন্ধুর অনুপস্থিতিতে বিয়ের ‘কবুল’ বলতে অস্বীকৃতি জানান এক বর। বন্ধুর আগমন না হওয়ায় প্রায় দুই ঘণ্টা থেমে থাকে পুরো বিয়ের অনুষ্ঠান। অবশেষে বন্ধুকে আনার পরেই হাসিমুখে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন তিনি।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলার তমরদ্দি ইউনিয়নের ক্ষিরোদিয়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। পরে ঘটনাটির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, যা এখন নেটিজেনদের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।
আরও পড়ুন: তিন যুগ পর চাকসু নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু
স্থানীয় সূত্র জানায়, মাইজচরা গ্রামের করিম বেপারীর ছেলে আরমান হোসেনের বিয়ে ঠিক হয় ক্ষিরোদিয়া গ্রামের এক তরুণীর সঙ্গে। দুপুরে বরযাত্রী রওনা দেওয়ার সময় আরমানের ঘনিষ্ঠ বন্ধু রিয়াজের সঙ্গে গাড়িতে বসা নিয়ে মনোমালিন্য হয়। রাগ করে রিয়াজ বিয়েতে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
বরযাত্রী কনের বাড়িতে পৌঁছানোর পর আরমান বন্ধুকে না দেখে গাড়ি থেকে নামতেও রাজি হননি। পরিবারের সদস্য, আত্মীয়-স্বজন ও গ্রামবাসীর অনুরোধেও তিনি অনড় থাকেন। স্পষ্ট জানিয়ে দেন—রিয়াজ না আসলে কবুল বলব না।
আরও পড়ুন: উৎসবমুখর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, ক্যাম্পাসে কঠোর নিরাপত্তা
অবশেষে প্রায় দুই ঘণ্টা পর বরপক্ষের লোকজন গিয়ে বন্ধুকে নিয়ে আসেন। বন্ধুকে দেখে আরমানের মুখে হাসি ফোটে, এবং তখনই তিনি মঞ্চে বসে ‘কবুল’ বলেন।
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল মান্নান রানা বলেন, এমন বন্ধুত্ব এখন বিরল। বন্ধুর জন্য বিয়ের অনুষ্ঠান থেমে গেল—এটা সত্যিই অবিশ্বাস্য। কিন্তু সেই বন্ধুত্বই শেষ পর্যন্ত বিয়েকে সম্পূর্ণ করেছে।
কনেপক্ষের আত্মীয় আলতাফ হোসেন জানান, আমরা দুপুর থেকে অতিথিদের খাওয়ানো শুরু করেছিলাম। কিন্তু বর কবুল বলছে না—কারণ, তার বন্ধু নেই! দুই ঘণ্টা পর বন্ধুকে এনে বিয়ে সম্পন্ন হলো।
স্থানীয় প্রবীণ আব্দুল গফুর মিয়া বলেন, আজকাল বন্ধুত্ব এত গভীর দেখা যায় না। তবে বিয়ের দিনে এমন নাটক না ঘটলেই ভালো হতো।
এ বিষয়ে বর আরমান হোসেন বলেন, রিয়াজ আমার ছোটবেলার বন্ধু। ও ছাড়া জীবনের সবচেয়ে আনন্দের দিনে আমি কবুল দিতে পারিনি। ও আসার পরই বিয়ে করেছি।