আশুলিয়ায় মধ্যরাতে কানাডা প্রবাসীর এগ্রো প্রকল্পে হামলা আগুন, পুলিশ নির্বিকার

মঙ্গলবার মধ্যরাতে আশুলিয়ার বাইপাইলে পুলিশের সামনেই এগ্রো প্রজেক্টে হামলা করে ভাঙচুরের পর আগুন ধরিয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এগ্রো ফার্ম এর মালিক প্রবাসী এমএ মতিন পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ে অভিযোগ দেওয়ার পর টহল পুলিশের দল আসলে তাদের সামনে দুর্বৃত্তরা তাণ্ডব চালায় ।
পুলিশের এই নির্বিকার ভূমিকায় আতঙ্কের মধ্যে আছে এলাকাবাসী। ঘটনার সময় বাংলাবাজার পত্রিকার পক্ষ থেকে আশুলিয়া ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল হান্নানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। ওসি বলেন স্থানীয় বিএনপি নেতা দুলাল ডাক্তারের সাথে জমি সংক্রান্ত বিরোধ আছে। দুলাল ডাক্তার লোকদের নিয়ে এ হামলা করেছে। তাদের আটকের কথা বললে ওসি জানায়, আমি পাহারা দিতে পারবো না। এলাকায় আরো অনেক কাজ আছে। কানাডা প্রবাসী ব্যবসায়ী এম এ মতিন জানান, ঢাকা জেলাধীন আশুলিয়া থানার বাইপাইলের দক্ষিণ গাজীরচট এলাকায় আমাদের একটা এগ্রো প্রজেক্ট রয়েছে।
আরও পড়ুন: ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে বাসের ধাক্কায় নারী নিহত
গত ১৬/৪/২০২৫ রাত প্রায় ১২.০০ দিকে আমার ফোনে হোয়াটসঅ্যাপ কল আসে এবং ফোন করতেই নিজেকে দুলাল ডাঃ বিএনপির আশুলিয়ার ধামসোনা ইউনিয়নের সেক্রেটারি বলে দাবি করে এবং আমাকে বলে আমার প্রজেক্টর ভিতর আমি পাব। আমি বললাম আমি তো কোন দিন আপনার নাম ও শুনি নাই এবং আপনার সাথে আমার কোন দিন দেখা হয়নি বা কথা হয়নি! তখন তিনি আমাকে বলেন যে, এখন চিনবেন আপনি তো স্বৈরাচারের দোসর ছিলেন! আমি প্রতিবাদ করতেই তিনি আমার সাথে অত্যধিক খারাপ আচরণ করেন এবং হুমকি দিয়ে বলেন যে, এই জমি আমার আমি রহিম খান ( আওয়ামী লীগের নেতা!মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন নিয়েছি । বর্তমানে মানিকগঞ্জ জেলে আছেন ৯ হত্যা মামলার আসামি)! কিন্তু রহিম খানের সাথে আমার জায়গা জমি নিয়ে কোনো বিরোধ বা মামলা নেই। পরবর্তীতে আমি দুলাল ডাক্তারের নামে ২০/৪/২০২৫ সালে আশুলিয়া থানায় একটি জিডি দায়ের করি।
এর কিছুদিন পর থেকে আলম নামে একজন সন্ত্রাসী (দুলাল ডাক্তারের ঘনিষ্ঠ সহযোগী) আমার স্ত্রীর মোবাইল ফোনে হোয়াটসঅ্যাপে কল দিয়ে ২০০০০০০/= ( বিশ লক্ষ টাকা) চাঁদা দাবী করে আসছিল! পরবর্তীতে গত মাসের ২৬ তারিখ রাতে আলম ও অজ্ঞাত ব্যক্তি রাত আনুমানিক ২.০০ টার দিকে আমাদের প্রজেক্ট আক্রমণ করে ব্যপাক গোলা বর্ষণ করে এবং আমাদের প্রজেক্টের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে এবং অনেক সিসি ক্যামেরা ভাংচুর করে ( যাহারা ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে) কিন্তু আ দিন আমরা মামলা করতে গেলে আমরা ব্যর্থ হই ! পরবর্তীতে আবার ২৯/০৪/২০২৫ ইং বাত আনুমানিক ৩টার দিকে আবার আক্রমণ করে ব্যপর গোলাগুলি করে (গুলির খোসা এবং অন্যান্য আলামত পুলিশ জব্দ করে) এবং আমাদের প্রজেক্টের বিদুৎ বিছিন্ন করে এবং অনেক গুলো সিসিটিভি ক্যামেরা ভাংচুর করে (যাহার ভিডিও ফুটেজ পুলিশ সংগ্রহ করেছে)। ঐ দিন আমরা মামলা দায়ের করতে গেলে ঘটনার মূল হোতা দুলাল ডাক্তারের নাম বাদ দিয়ে পুলিশ শুধুমাত্র মামলা রুজু করে কিন্তু আসামি গ্রেপ্তার করতে গড়িমসি করে ! এখানে উল্লেখযোগ্য যে, উভয় আমরা ৯৯৯ এ ফোন করে পুলিশের সহায়তা কামনা করি।
আরও পড়ুন: ফায়ার সার্ভিসের ১১টি ইউনিটের চেষ্টায় গুলিস্তানের আগুন নিয়ন্ত্রণে
সর্বশেষ গতকাল মঙ্গলবার রাত প্রায় ১২.২০ মিনিটে আলম এবং অপর আসামি সহকারে প্রায় ২৫-৩০ আমাদের প্রজেক্ট আক্রমণ করে ব্যাপক ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, প্রজেক্টর দেওয়ায় ভাংচুর করে অনেক গুলি মোবাইল ফোন,নগদ টাকাসহ অন্যান্য মালামাল ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। সময় খারাপ প্রকল্পের আসবাবপত্র এবং অন্যান্য মালামলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় উপস্থিত থাকলেও তারা কোন ব্যবস্থা নেয়নি। এক্ষেত্রে আমরা ৯৯৯ ফোনে সাহায্য কামনা করি কিন্তু পুলিশ অনেক গড়িমসি করে অনেক দেরীতে আসে এবং ডিউটি অফিসার মোজাম্মেল আমাদের সাথে খারাপ আচরণ করে ! আশুলিয়া থানা পুলিশের এ ধরনের আচরণ দুঃখজনক। অপরাধীদের সাথে তাদের গোপন যোগাযোগ বা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পুলিশ কর্মকর্তারা বিব্রত বোধ করছে বলে প্রতীয়মান হয়।
বর্তমানে আমারা অনেক আতংকিত অবস্থায় আছি এবং শুনেছি যে, দুলাল ডাক্তার লোকজন জড় করছে আজকে রাতে আবার আক্রমণ করবে আমাদের জানমালের ক্ষতি করে প্রজেক্ট দখল করে নিবে।