পেটের সমস্যা দূর করতে প্রতিদিনের অভ্যাসে আনুন এই ৫টি পরিবর্তন

পেট ফুলে যাওয়া, অ্যাসিডিটি, ধীর হজম ও অনিয়মিত মলত্যাগের মতো সমস্যা বর্তমানে অনেকেরই দৈনন্দিন জীবনের অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে সামান্য কিছু পরিবর্তন আনলেই এই সমস্যা থেকে মুক্তি সম্ভব। খাদ্যাভ্যাস, পানির পরিমাণ ও নিয়মিত জীবনযাপনের ওপর গুরুত্ব দিলে হজমশক্তি যেমন উন্নত হয়, তেমনি সারাদিন শরীরও থাকে হালকা ও কর্মক্ষম। চলুন জেনে নিই, পেট ভালো রাখতে কোন অভ্যাসগুলো গড়ে তুলবেন
হালকা ডিটক্স পানীয় দিয়ে দিন শুরু করুন
আরও পড়ুন: যে ৩টি খাবার খেলে পুরুষদের প্রোস্টেট ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে
প্রতিদিন সকালে লেবু, আদা বা জিরা মিশ্রিত হালকা গরম পানি পান করলে শরীর থেকে জমে থাকা বিষাক্ত পদার্থ বের হয়ে যায়। এটি হজমশক্তি বাড়ায় এবং লিভারের কাজ সহজ করে। খালি পেটে এই পানীয় শরীরকে হাইড্রেট রাখে ও দিনভর পাচন প্রক্রিয়া উন্নত করে।
প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ খাবার খান
আরও পড়ুন: জেনে নিন দাম্পত্য সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার সঠিক সময় ও উপায়
২০২২ সালের এক গবেষণা অনুযায়ী, অন্ত্রের ভালো ব্যাকটেরিয়ার ভারসাম্য রক্ষায় প্রোবায়োটিক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই খাদ্যতালিকায় দই, বাটারমিল্ক, ইডলি, গাঁজানো ভাত বা ঘরে তৈরি আচার অন্তর্ভুক্ত করুন। এগুলো হজমশক্তি বাড়ায়, পেট ফাঁপা কমায় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে। নিয়মিত প্রোবায়োটিক গ্রহণ পুষ্টির শোষণ উন্নত করে এবং অন্ত্রের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
ধীরে ধীরে চিনি ও ক্যাফেইন কমান
চা, কফি ও অতিরিক্ত মিষ্টি খাবার পরিপাকতন্ত্রে অ্যাসিডিটি ও জ্বালাভাব সৃষ্টি করে। তাই ধীরে ধীরে চিনি ও ক্যাফেইনের ব্যবহার কমিয়ে আনুন। এর পরিবর্তে মৌরি, ক্যামোমাইল বা আদা চা পান করতে পারেন। এসব ভেষজ ইনফিউশন হজমকে সহায়তা করে, প্রদাহ কমায় ও শরীরে পানি ধরে রাখার প্রবণতা হ্রাস করে। খাবারের পর মিষ্টি না খেয়ে বিকল্প হিসেবে ফল যেমন খেজুর বা স্ট্রবেরি খেতে পারেন।
হালকা ও আঁশযুক্ত খাবার খান
পাচনতন্ত্রকে বিশ্রাম দিতে হালকা খাবার বেছে নিন। শাকসবজি, ডাল, স্যুপ বা খিচুড়ি জাতীয় খাবার হজমে সহায়ক এবং পেট ফাঁপা রোধে কার্যকর। আঁশযুক্ত খাবার যেমন ওটস, স্প্রাউট, সাবুদানা অন্তর্ভুক্ত করলে অন্ত্রের গতিবিধি নিয়ন্ত্রিত থাকে ও দীর্ঘক্ষণ পেট ভরতি অনুভূত হয়।
খাবারের সময় নির্দিষ্ট রাখুন
অনিয়মিত সময় খাবার খেলে হজম ও বিপাকক্রিয়া ব্যাহত হয়। তাই নির্দিষ্ট সময় পর পর খাবার খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। ঘুমানোর অন্তত ২–৩ ঘণ্টা আগে রাতের খাবার শেষ করুন। নিয়মিত সময়সূচী অনুসারে খেলে শরীর খাবার সহজে প্রক্রিয়া করতে পারে এবং খাবারের পর অস্বস্তি বা পেট ফুলে যাওয়ার সমস্যা কমে।
পেট ভালো রাখার মূল চাবিকাঠি হলো নিয়মিত জীবনযাপন, পর্যাপ্ত পানি পান এবং সুষম খাদ্যাভ্যাস। ছোট ছোট পরিবর্তনই দীর্ঘমেয়াদে এনে দিতে পারে বড় পরিবর্তন সুস্থ হজম ও প্রাণবন্ত জীবন।