এনআইডি ও ফোন নম্বর ছাড়া যাত্রী নেওয়া ঝুঁকিপূর্ণ: র্যাব

টাঙ্গাইলে চলন্ত বাসে ডাকাতি ও ধর্ষণের ঘটনায় মূল পরিকল্পনাকারী রতনসহ ডাকাত চক্রের ১০ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। টিকিট না কেটে রাস্তার মাঝ থেকে যাত্রী নেওয়ায় এ ঘটনার অন্যতম কারণ বলে জানিয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
র্যাব বলেছে, কাউন্টারে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ও মোবাইল নম্বর দিয়ে টিকিট কাটলে মহাসড়কে ডাকাতির ঘটনা কমে আসবে। এছাড়া রাস্তা থেকে ভুলেও যাত্রী তোলা যাবে না।
আরও পড়ুন: আওয়ামী দোসররা বিদেশের মাটিতেও অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে: রিজভী
সোমবার (৮ আগস্ট) দুপুরে কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে টাঙ্গাইলে বাসে ডাকাতি ও ধর্ষণের ঘটনায় ১০ ডাকাত গ্রেফতারের বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এ তথ্য জানান।
টাঙ্গাইল ও মধুপুরে বারবার ডাকাতি হচ্ছে, এরপরও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কেন কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না? এমন প্রশ্নের জবাবে র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ডাকাতির ঘটনায় আমরা আমাদের দায় এড়াতে পারি না। পাশাপাশি রাতে মহাসড়ক থেকে বাসে যাত্রী তোলা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। যাত্রীরা অস্ত্রশস্ত্র ব্যাগে নিয়ে বাসে উঠছে, কিন্তু তাদের চেকআপ ছাড়াই বাসে ওঠানো হচ্ছে। বাসের সুপারভাইজার, হেলপার কিংবা চালক টাকার লোভে টিকিট ছাড়া রাস্তা থেকে যাত্রী তুলছেন। এ বিষয়ে সবাই যদি সতর্ক থাকা যায় তবে ডাকাতির ঘটনা কমে আসবে।
আরও পড়ুন: সিভিল এভিয়েশন একাডেমিতে যুক্তরাজ্যের সহযোগিতায় ICAO National Inspectors Course সম্পন্ন
‘কাউন্টার থেকে যাত্রী তোলার সময়কার সিসিটিভি ফুটেজ যদি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে চলে আসতো বা বামে যদি সিসি ক্যামেরা থাকতো তাহলে ডাকাতি অনেকাংশে কমে আসতো’ যোগ করেন তিনি।
তিনি বলেন, ডাকাতির মূল পরিকল্পনাকারী গ্রেফতার রতন এর আগে ১০টি বাসে ডাকাতি করেছে। তবে শ্লীলতাহানি বা ধর্ষণের মতো ঘটনা এর আগে কোনো বাসে করেনি বলে প্রাথমিকভাবে তারা জানিয়েছে। তবে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদে বিষয়টি পরে জানা যাবে।
গ্রেফতারদের মধ্যে কে কে ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত ছিল- এমন প্রশ্নের জবাবে কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি ও মেডিকেল পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর জানা যাবে শ্লীলতাহানির সঙ্গে কারা জড়িত ছিল।
মোবাইল ও মেয়েদের অলংকার উদ্ধার করলেও যাত্রীদের খোয়া যাওয়া টাকা উদ্ধার করতে পারেনি র্যাব। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আপনারা জানেন গাড়িতে ডাকাতির সময় ভাগাভাগি নিয়ে ডাকাতদের মধ্যে তর্কবিতর্ক হয়। এরপর টাঙ্গাইলের একটি বাসায় গিয়ে যাত্রীদের কাছ থেকে নেওয়া টাকা ও অন্যান্য সামগ্রী ডাকাতরা ভাগবাটোয়ারা করে নেয়। নগদ অর্থ পেয়ে ডাকাতরা খরচ করে। এতে করে নগদ টাকা উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। কত টাকা ডাকাতরা যাত্রীদের কাছ থেকে নিয়েছিল সেটিও প্রাথমিকভাবে জানা যায়নি।
স্ক্যান ছাড়া বাসে যাত্রী নেওয়ায় ঝুঁকিপূর্ণ জানিয়ে কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, যদি কোনো যাত্রী বোমা নিয়ে বাসে ওঠে তাহলে সেটি বাসে থাকা সব যাত্রীর জন্য বিপজ্জনক।
এসময় বাসে যাত্রী পরিবহনের ক্ষেত্রে নির্দেশনা মেনে চলার কথা বলেন। এর মধ্যে রয়েছে- পথে কোনো যাত্রী তোলা যাবে না, ব্যাগসহ যাত্রীকে স্ক্যান ছাড়া গাড়িতে তোলা যাবে না, এনআইডি ছাড়া টিকিট দেওয়া যাবে না, সব যাত্রীর নিরাপত্তার জন্য বাসে সিসি ক্যামেরা লাগাতে হবে।